করোনাভাইরাস এর তাণ্ডব বিশ্বব্যাপী এখনও বিদ্যমান। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। করোনায় নতুন করে শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যাও আগের মতোই। কিছুটা কমবেশি হয়তো হচ্ছে, তবে এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা পরিস্থিতি।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে শঙ্কার কথা জানাচ্ছে যুক্তরাজ্য। সেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাই তিন স্তরের নতুন বিধিনিষেধ বিবেচনা করা হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন: ‘এমন কিছু যে ঘটবে তা অনিবার্য ছিল।’
ভারত এর আগে থেকেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাবু। সেখানেও প্রতিনিয়ত লাখো মানুষ শনাক্ত হচ্ছেন। করোনায় মারা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে লকডাউনে যাচ্ছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা স্পেনে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মাদ্রিদ। সোমবার থেকে ৮ লাখ ৫০ হাজার জনসংখ্যার দেশটি কঠোর লকডাউন দিতে যাচ্ছে। উত্তর গোলার্ধের এই দেশে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে অনেকে। দেশটিতে বর্তমানে ৬ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। আর প্রাণ হারিয়েছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।
বাংলাদেশে কয়েকদিন নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার কমতির দিকে। মৃত্যুর সংখ্যাও একই বৃত্তে ওঠানামা করছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর শঙ্কা অমূলক নয়। এজন্য এখন থেকেই সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।
তবে সেই সতর্ক অবস্থানের বিন্দুমাত্র চিহ্ন এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। মাস্ক পরার কথা বলা হলেও বেশিরভাগ মানুষ মাস্কও পরছেন না। এ অবহেলা ও নিয়ম না মানার সংস্কৃতি ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের আরও কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
অন্যদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি ৭ দফা সুপারিশ দিয়েছে। ওই সুপারিশে দ্রুত ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য কয়েকটি দিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। এমনকি দ্রুত ভ্যাকসিন পেতে প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো অগ্রিম টাকা দেওয়ার পরামর্শও জাতীয় কমিটি। এসব সুপারিশ আমলে নিয়ে করোনা মহামারি মোকবেলায় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে হবে।
আমরা বরাবরের মতো আবারও বলতে চাই যে, সরকারের একার পক্ষে করোনাভাইরাস মোকাবেলা সম্ভব নয়। এজন্য সাধারণ জনগণের সচেতনতা জরুরি। নিয়ম মানার সংস্কৃতি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে দ্বিতীয় ঢেউয়ে কঠোর পরিণতি বরণ করতে হতে পারে বলেই আমাদের শঙ্কা। এজন্য আগেভাগেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।