চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী

করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী (৬০)। বুধবার দিবাগত (২৭ মে) রাতে রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তি‌নি মারা যান বলে জানা গেছে।

হাসপাতালের কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ ও পিআরও তারিক শিবলী চ্যানেল আই অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কর্মকর্তা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার করোনাভাইরাসের উপসর্গ ছিল। আজ বৃহস্পতিবার তার করোনা পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে আইইডিসিআরে। সন্ধ্যানাগাদ হয়তো রিপোর্ট পাওয়া যাবে। তখন পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি করোনায় মারা গেছেন কি না।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ওই ব্যাংক কর্মকর্তা হার্টঅ্যাটাক করে মারা গেছেন। তার করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কর্মকর্তা আশরাফ আলী করোনায় মারা যাননি। তিনি হার্টের সমস্যা ভুগছিলেন। হার্টফেইল করে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, আমি এই মাত্র আশরাফ আলীর বাসা থেকে এলাম। হাসপাতালের দেয়া তার ডেট সার্টিফিকেটেও লেখা আছে হার্টের সমস্যায় মারা গেছেন। তবে তার করোনা পরীক্ষা করা হয়নি বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ওই কর্মকর্তায় করোনায় মারা যাননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিজেন্ট হাসপাতালের পিআরও তারিক শিবলী বলেন, করোনা কাউকে মেরে ফেলে না। করোনা রোগীর কোনো না কোনো অরগ্যানকে বন্ধ করে দেয়। যেমন- হয়তো শ্বাসনালী বন্ধ করে দেয়, কিডনি ড্যামেজ করে ফেলে বা হার্ট ব্লক করে দেয়। অর্থাৎ কোনো না কোনো অরগ্যানকে অকেজো করে দেয়। এতে রোগী মারা যায়। তেমনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তারও হার্ট ফেইলিউর হয়। এতে তিনি মারা যান।

তিনি বলেন, তাই কখনোই ডেথ সার্টফিকেটে সরাসরি লেখা হয় না যে, রোগী করোনায় মারা গেছেন। তবে তার করোনা পজিটিভ ছিল কি না তা রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।

তবে করোনার উপসর্গ নিয়ে এই প্রথম বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা মারা গেলেন।

এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৭ জন কর্মকর্তা মারা যান। এছাড়া একজন ব্যাংক পরিচালকও করোনায় মারা গেছেন। যেসব ব্যাংকার করোনায় মারা গেছেন তারা হলেন- সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মুজতবা শাহরিয়ার, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) মাহবুব এলাহী, রূপালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সহিদুল ইসলাম খান, এনসিসি ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট জামশেদ হায়দার চৌধুরী, উত্তরা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার কর্মকর্তা ওয়াহিদ মর্তুজা, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের অ্যাডমিন শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার হাসিবুর রহমান এবং সিটি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু সাঈদ।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এস আলম গ্রুপ ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিচালক মোরশেদ আলম।

করোনায় ব্যাংকারদের আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ৬০ জন ব্যাংকার এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৩০ জন কর্মকর্তা। এরপরই রয়েছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ১০ জন। অগ্রণী ব্যাংকের ৩ জন, রূপালী ব্যাংকের ৩ জন, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৩ জন, সিটি ব্যাংকের ২ জন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২ জন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ জন ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালক। এর মধ্যে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ রয়েছেন। তি‌নি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক। যদিও তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী।