করোনাভাইরাসে দিন দিন আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপী এই অদৃশ্য ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এপর্যন্ত ৩২ লাখের বেশি, আর মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষের। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও দেশে নতুন ৫৬৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এই সময়ে মারা গেছেন আরও ৫ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এই গণনা বলে দিচ্ছে এখনও তার ভয়াল থাবা বিন্দুমাত্র শক্তি হারায়নি। বরং পূর্বের ক্ষিপ্রতা সহকারে ভাইরাসটি বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী লকডাউনসহ নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চললেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছুটা শিথিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশে করোনার আঘাত শুরু হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই এর বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে কয়েক দফায় এ ছুটি বাড়ানো হয়। সেটাও এখনও ৫ মে পর্যন্ত বহাল আছে। ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে রয়েছে। সাধারণ মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও। কিন্তু এরপরও সব জায়গায় পরিপূর্ণভাবে ঘরে থাকা নিশ্চিত হয়নি। এটা আসলে সচেতনতার অভাবেই হয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ঘরে থাকার জন্য সাধারণ ছুটি দেওয়া হলেও এর বিপরীত চিত্র আমরা দেখেছি। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিষয়টিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে। এখনও অনেক প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় চাকরিজীবীরা ঢাকামুখী হচ্ছেন। এতে আবারও সেই নিরাপত্তা লঙ্ঘন হচ্ছে। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপের অভাব রয়েছে বলে আমরা মনে করি।
বিশ্বব্যাপী অনেক দেশই লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবছে। এটা আসলে বাস্তবতাও। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সেই ক্ষতির চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা ভুলে গেলে চলবে না। এজন্য যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আরও কৌশলী ভূমিকা রাখতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।