মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সম্প্রতি জনসম্মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেছে।
এর আগে মাস্ক পরা নিয়ে বিদ্রুপ করা ট্রাম্পও এবার উল্টো পথে হাঁটছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল সম্প্রতি সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। মাস্ক পরা নিয়ে কঠোর অবস্থানে যুক্তরাজ্যও। জুনে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়। বর্তমানে শপিংমলেও মাস্ক বাধ্যতামূলক, না হলে গুণতে হবে জরিমানা।
শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ(হু) অনেকেই বলেছিলো মাস্ক করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম না, এখন তারাও তাদের বক্তব্য পাল্টাচ্ছে। কেউ কেউ তো ঘরেও মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে। অনেক সরকার তা পালনও করছে।
গত ছয় মাসে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া সরকারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। মার্চের মাঝের দিকে মাত্র ১০ টি দেশে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়। বর্তমানে ১৩০ টি দেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি রাজ্যে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে গবেষকদের একটি দল মাস্ক ফর অল।
কিছু গবেষণা অবশ্য বলছে জনগণের মনোভাব বদলাচ্ছে। যেসব দেশের আগে ফেসমাস্ক পরার কোনো ইতিহাস নেই তারাও এখন মাস্ক পরছে। যেমন ইতালির ৮৩.৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রর ৬৫.৮ শতাংশ, স্পেনের ৬৩.৮ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দি রয়্যাল সোসাইিটর একটি গবেষণা।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার সম্পর্কে যত বেশি জানা যাচ্ছে তাতেই এই পরিবর্তনটা আসছে বলে মনে করছে অনেকে। শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিলো, শুধু মেডিক্যাল কর্মীরা এবং যাদের হাঁচি-কাশির মতো লক্ষণ আছে তারাই মাস্ক পরিধান করবে। এখন বলা হচ্ছে যাদের কোনো লক্ষণ নেই তারাও সংক্রামক হতে পারে। শুধু মাস্কই পারে এটা অন্যদের মধ্যে ছড়ানো থেকে বাঁচাতে। ফলে জুনে তাদের নির্দেশনা বদল করে হু।
আবার এখন নতুন গবেষণা বলছে করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত। ফলে বদ্ধ ঘরেও মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এখনো আলাদা আলাদা দেশের মানুষের মাস্ক পরা নিয়ে আলাদা আলাদা মনোভাব আছে। ঘরের বাইরে ইটালির ৮৩ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রের ৫৯ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের ১৯ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরতে আগ্রহী।
আবার নির্দেশনা সত্ত্বেও অনেকেই এখনো হাত ধোয়া, শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারই পছন্দ করছে। মাস্ক পরার থেকে এটাকেই তারা সহজ মনে করছে বলে মন্তব্য করেন ইউনিভার্সিটি অব কুইবেকের মন্ট্রিয়াল সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের বিহেভিয়রাল মেডিসিনের চেয়ার কিম ল্যাভয়।
বলেন,মাস্ক পরার বিষয়টা কিছুটা জটিল। সেটা খুঁজতে হবে, কিনতে হবে, পরতে হবে, খুলে ফেলতে হবে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে। তাছাড়া সেটা পরে থাকা অস্বস্তিকরও। তাতেই আগ্রহ কম অনেকের।
কিন্তু নতুন সংক্রমণের ঢেউ সামলাতে মাস্ক পরা খুবই জরুরি বলেই সচেতন করছেন গবেষকরা।