চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

করোনাভাইরাস: দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৬৯৫

দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ৮৮তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৭ জন মারা গেছেন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ৪৭০ জন।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।

ডা. নাসিমা বলেন: গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ১০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৫১০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

তিনি বলেন: নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ২ হাজার ৬৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ১৪০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪৬-এ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৭০ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১ হাজার ৫৯০ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ।

ডা. নাসিমা বলেন: নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ২৮ জন পুরুষ ও নয়জন নারী। ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভা‌গের, দুজন রংপুর বিভাগের এবং একজন করে সিলেট ও খুলনা বিভাগের। ৩১ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, পাঁচজন বাসায় এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। বয়সের দিক থেকে ২১ থে‌কে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১২ জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন এবং সত্তরোর্ধ্ব চারজন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৯৫ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৬ হাজার ৪৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩৭ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৩৬ জন।

দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে করোনা ডেডিকেটেড ২ হাজার বেডের হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৪২৮ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৮১৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪৫ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৮২৮ জন।

দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেবেন। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করবেন। পানি ও তরল খাবার বেশি খাবেন। যারা সুস্থ হয়েছেন তারা মসলা দিয়ে পানি হালকা গরম করে খেয়ে উপকার পেয়েছেন। মধু, কালিজিরা খেয়েও অনেকে সুস্থ হয়েছে।

এছাড়া মৃতদের দেহ থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায় না উল্লেখ করে সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে দাফন বা সৎকার করা যাবে বলেও উল্লেখ করা হয় অনলাইন বুলেটিনে।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৬৪ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ৮২ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৩০ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসের দীর্ঘ এ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে অফিস-আদালত খোলা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে গণপরিবহনও।