এশিয়া মহাদেশ থেকে শুরু হলেও এখন ইউরোপের ওপর চেপে বসেছে করোনাভাইরাস মহামারী। তবে এরই মধ্যে এশিয়াতে ১৭ হাজার ৫৮৮ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। মোট আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৫ লাখ (৪ লাখ ৮৩ হাজার ২২৬) জন। চীনের উহানে ডিসেম্বরে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় এশিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৪৫ জন এবং নতুন আক্রান্ত ১০ হাজার ৯৫১ জন।
ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্যমতে, ইউরোপে এর অবস্থা আরও ভয়াবহ। এই মহাদেশটির ৩২টি দেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। দেশগুলোতে একদিনেই মৃত্যু ২ হাজার ১১২,আক্রান্ত ২৪ হাজার ৪৬৩।এবং মোট মৃত্যু ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৯৭ এবং মোট আক্রান্ত ১৩ লাখ ১ হাজার ২৭১।
উত্তর আমেরিকার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যাবে,মঙ্গলবার পর্যন্ত এই মহাদেশটির ৯টি দেশে করোনায় মৃত্য এবং আক্রান্ত বেশি। তারমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশগুলোতে একদিনেই মৃত্যু ১ হাজার ৫৯৪,আক্রান্ত ২৬ হাজার ১৯৩। সেখানে মোট মৃত্যু ৬১ হাজার ৫৪৯ এবং মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৯৬। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যু ১ হাজার ৩৮৪জন, নতুন শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ১৯৬ জন।
দক্ষিণ আমেরিকার তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মহাদেশটিতে একদিনে ৮টি দেশে করোনাভাইরাসে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। করোনা শনাক্ত রোগী এবং মৃত্যুতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রাজিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাজিলে ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৭২ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৪২ জন।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে একদিনেই মৃত্যু ৪৪১,আক্রান্ত ৬ হাজার ২৫৪। এবং মোট মৃত্যু ৬ হাজার ৭২০ এবং মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৪।
আফ্রিকার দেশগুলোতে একদিনেই মৃত্যু ৩৯জন,আক্রান্ত ১ হাজার ৩৪১।এবং মোট মৃত্যু ১ হাজার ৪৬৪, মোট আক্রান্ত ৩৩ হাজার ৯৯৮ জন।
ওসেনিয়া মহাদেশে একদিনেই মৃত্যু ১ জন,আক্রান্ত ৪ জন। এবং মোট মৃত্যু ১০২ জন,মোট আক্রান্ত ৮ হাজার ২৯০ জন।
করোনা-আক্রান্ত এবং মৃত্যু এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির শিকার ৮১ শতাংশ রোগীই মাত্র ১০টি দেশের। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে করোনার প্রকোপ চলছে কয়েকটি দেশে। আর আফ্রিকায় ভাইরাসটি তেমন সুবিধা করতে পারছে না। দক্ষিণ এশিয়াতেও এর অবস্থান বেশ দুর্বল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন থেকে ইউরোপ ঘুরে ভাইরাসটি দক্ষিণ এশিয়ায় এসেছে। এর মধ্যে জিনগত পরিবর্তনের কারণে করোনা দুর্বল হয়েছে। এ অঞ্চলের আবহাওয়াও কাজ করেছে করোনার প্রতিকূলে।
এ পর্যন্ত ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা।এর মধ্যে ৬টি দেশ ইউরোপের এবং ৩টি এশিয়ার। তবে শীর্ষে রয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তারপর ইটালি, স্পেন, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইরান, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক।
বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত আর প্রাণ হারিয়েছে ২ লাখেরও বেশি মানুষ।