যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি আবারও দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিশ্ববাসীর কপালে। একই প্রজাতির ভাইরাস পাওয়া গেছে নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়াতেও। নতুন প্রজাতিটির বিস্তার ঠেকাতে নেওয়া হচ্ছে নানান পদক্ষেপ। এরই মধ্যে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে আর সৌদি আরবও স্থগিত করে দিয়েছে ফ্লাইট।
কতটা জানি আমরা করোনাভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি সম্পর্কে? গবেষকরা বলছেন, নতুন এই ভাইরাসটি ৭০ শতাংশ দ্রুত ছড়ায়। একমাস আগে নভেম্বরেও যেখানে যুক্তরাজ্যে আক্রান্তদের চারভাগের একভাগ এই নতুন প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলো বর্তমানে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই তৃতীয়াংশে।
নতুন প্রজাতির ভাইরাসটি বেশি বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ, নতুন এই প্রজাতিটি ভাইরাসের অন্য প্রজাতিকে প্রতিস্থাপন করে দিচ্ছে। এটির বিভাজন বা রূপান্তর ভাইরাসের কিছু অংশে পরিবর্তন আনে, যা গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে এসব বিভাজনের মধ্যে বেশ কিছু মানুষের দেহের কোষকে সংক্রমিত করার কাজে ভাইরাসের সক্ষমতা বাড়ায়। এসব বৈশিষ্ট্যর কারণে ভাইরাসটি সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ফলে নতুন প্রজাতিটি উপযুক্ত পরিবেশ পেলে দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে করোনাভাইরাসের এমন রূপ বদলের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। চীনের উহানে প্রথম যে করোনাভাইরাস দেখা গেছিলো তার সঙ্গে বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া ভাইরাসের কোনো মিল নেই।
গত ফেব্রুয়ারিতে D614G নামে একটি ভাইরাস ইউরোপে ধরা পরে এবং এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের ছিলো। পরে A222V নামে আরেকটি ভাইরাস প্রজাতিও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্পেনে গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় এটি বেশি ছড়িয়ে পড়ে।
নতুন প্রজাতির ভাইরাসটি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসটি এমন কোন রোগীর দেহে তৈরি হয়েছে, যার রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে একদমই প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তার বদলে বরং তার দেহ ভাইরাসটির পরিবর্তনের উর্বরক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে।
তবে এখনও পর্যন্ত নতুন প্রজাতির ভাইরাসটি বেশি প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য করা যাচ্ছে না। কারণ তেমন কোনো প্রমাণ মেলেনি কিন্তু এর ফলে আক্রান্ত হয়েছে অনেকে। মানে হাসপাতালে সেবার পরিমাণ অনেক বাড়াতে হবে আর ভোগান্তি বাড়বে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিদ্যমান ভ্যাকসিনই এই প্রজাতির ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম। ভ্যাকসিনের উপর ভাইরাসরটির এমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি যাতে করে তার কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়।