হাতেগোনা কয়েকজনের বিরল এক ক্লাব! সাউথ আফ্রিকা ম্যাচের প্রথম বলের পর সেই ক্লাবে নাম লেখালেন দিমুথ করুনারত্নেও। যারা সদস্য তারা নিশ্চিতভাবেই নিজ ইচ্ছায় এই ক্লাবে যোগ দিতে চাননি, বোলাররা জোর করেই তাদের ঢুকিয়ে দিয়েছেন ছোট্ট তালিকায়।
ক্লাবটার সদস্য কারা জানেন? বিশ্বকাপে প্রথম বলে আউট হওয়া বিরল চার ওপেনার! শুক্রবার সাউথ আফ্রিকা ম্যাচের আগে পর্যন্ত ওই ক্লাবের সদস্য ছিলেন বাংলাদেশের হান্নান সরকার, জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর ও নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল। করুনারত্নে যোগ দেয়ায় সদস্য সংখ্যা একজন বেড়েছে।
প্রথম বলে আউট হওয়া যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই অস্বস্তির। ম্যাচের প্রথম বল হলে তো অস্বস্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেটি যদি হয় বিশ্বকাপের মঞ্চে, রীতিমত বুক ভেঙে যাওয়ার দশা!
বাংলাদেশের হান্নান সরকারের কষ্টটাই সবচেয়ে বেশি, কারণ তার আগে বিশ্বকাপে যে কোন ওপেনারই আউট হননি প্রথম বলে!
২০০৩ আসরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চামিন্ডা ভাসের করা প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছিলেন হান্নান। এরপর টানা দুই বলে আরও দুই উইকেট তুলে নিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম তিন বলে হ্যাটট্রিক করা একমাত্র পেসার বনে যান ভাস।
সঙ্গী পেতে হান্নানকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে পুরো একযুগ। ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম বলে আউট হন ব্রেন্ডন টেলর। গাপটিল আর করুনারত্নে তো এই বিশ্বকাপেরই শিকার।
লজ্জার তো বটেই, রীতিমত ভুলতে চাওয়ার মতো রেকর্ড। কেউই যে রেকর্ডের অংশ হতে চায় না। যার তোপে হান্নানের চোট্ট এ ক্লাবে ঢোকা, সেই ভাসের দেশেরই এক ব্যাটসম্যানকে পাশে পেয়ে খুশি থাকার কথা তার। সেটি না করে বাংলাদেশের সাবেক ওপেনার সমবেদনা জানিয়ে করুনারত্নেকে ফোনে বার্তা পাঠিয়েছেন।
‘দিমুথকে আমি ফোনে বার্তা পাঠিয়েছি, কষ্ট পেয়োনা। এটা সব ব্যাটসম্যানেরই হতে পারে। এমনকি সুনীল গাভাস্কারও টেস্টে প্রথম বলে আউট হয়েছেন।’ বাংলাদেশ থেকে ভারতের ডেকান ক্রনিকলকে এমনটাই জানিয়েছেন হান্নান।
‘প্রথম বলে আউট হওয়াটা খুবই খারাপ অভিজ্ঞতা। তবে বিশ্বকাপে আউট হলেও সেটা অন্যকিছু মনে হয় না। প্রতিটি খেলোয়াড়দের কাছেই সব ম্যাচের গুরুত্ব এক। প্রতিটি ম্যাচই মহাগুরুত্বপূর্ণ।’
অন্য ব্যাটসম্যানদের তুলনায় করুনারত্নে খানিকটা ব্যতিক্রমই, কারণ তার কাঁধে ছিল পুরো শ্রীলঙ্কার ভার। সেই ভার ঠিকমত বইতে পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক। ম্যাচে মাত্র ২০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। যাতে ঝুলে গেছে সেমিফাইনালের স্বপ্ন।
করুনারত্নের জন্য খানিকটা সমবেদনাও তাই বোধ করছেন হান্নান, ‘দিমুথ একজন অধিনায়ক, তাকে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হত। তবে সে এমনই একজন ব্যাটসম্যান যে ভেঙে পড়ে না।’