বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী কমডোর গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আবু নাসের চৌধুরীকে জামিন দেননি দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তবে অসুস্থতা বিবেচনায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রামের কারা কর্তৃপক্ষর প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবু নাসের চৌধুরীর জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আর জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন গোলাম রব্বানী। পরে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করা নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নৌ-পরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দেন।
গোলাম রব্বানী হত্যা মামলার রায়ে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আব্দুল মালেক সোহেল নামের তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। কিন্তু অন্য দুই আসামি কেইপিজেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে দেওয়া হয় পাঁচ বছর কারাদণ্ড। এছাড়া এই মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি মানসুর আলম ও সাইফুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালের রায়ে খালাস দেওয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। সে রায়ে হাইকোর্ট আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবিরের সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সেই সাথে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া তিন আসামির মধ্যে মো. হাশেম ও সোহেল হাইকোর্টের রায়ে খালাস পান। আর মো. সেলিমের যাবজ্জীবন বহাল থাকে। হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায়ে দণ্ডিত তিন আসামি আবু নাসের চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও সেলিমকে আট সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করে দণ্ড ভোগ করতে বলা হয়। এছাড়া আসামি সাইফুল ইসলামকেও আট সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন আদালত। তবে হাইকোর্টের রায় প্রকাশের আগেই মারা যান আসামি হুমায়ুন কবির। পরবর্তীতে দণ্ডিত দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তারা কারাভোগ করছেন। তবে কারাগারে থেকে আবু নাসের চৌধুরী আপিল বিভাগে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।