চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করা হয়েছে। আজ ২৪ জুলাই সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর মধ্য থেকে ২৫ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত ৩১ গুণী শিল্পীর হাতে তুলে দেন সম্মাননা পদক ও সার্টিফিকেট।
এবার যৌথ ভাবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান শাকিব খান ও মাহফুজ আহমেদ। সেরা অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং সেরা পরিচালকের পুরস্কার যুগ্মভাবে পান মোরশেদুল ইসলাম ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু।
চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাহিত্যিকরা চলচ্চিত্রের গল্প লিখলে তা সাধারণ মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চলচ্চিত্র দেখার পরও তার রেশ থেকে যায়। তাই কবি সাহিত্যিকদের চলচ্চিত্রের গল্প লেখায় এগিয়ে আসা দরকার।’
এছাড়া সম্মিলিতভাবে চলচ্চিত্রশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নতমানের সিনেমা তৈরি করেন। যে সিনেমায় সমাজ, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ধারণ করে। সরকার সব ধরণের সহযোগিতা করবে।’
জয়া আহসান কলকাতায় একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যাননি এই অনুষ্ঠানের জন্য। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনা উল্লেখ করে তাকে সাধুবাদ জানান। তিনি শিল্পীদের অভয় দিয়ে বলেন, ‘অনেক শিল্পী আছেন যারা বৃদ্ধ বয়সে চিকিৎসার টাকা পান না। তাদের জন্য একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করতে চাই।’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্যসচিব মর্তুজা আহমদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ।
এর আগে নির্বাচিতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয় বিশিষ্ট অভিনেত্রী শাবানা ও সঙ্গীতজ্ঞ ফেরদৌসী রহমানকে। পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন—
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যুগ্মভাবে ‘একাত্তরের গণহত্যা’ ও ‘বধ্যভূমি’
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: যুগ্মভাবে মোরশেদুল ইসলাম (অনিল বাগচীর একদিন) ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা: যুগ্মভাবে মাহফুজ আহমেদ (জিরো ডিগ্রী) ও শাকিব খান (আরো ভালোবাসবো তোমায়)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী: জয়া আহসান (জিরো ডিগ্রী)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (পার্শ্ব চরিত্র): গাজী রাকায়েত (অনিল বাগচীর একদিন)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (পার্শ্ব চরিত্র): তমা মির্জা (নদীজন)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (খল চরিত্র): ইরেশ যাকের (ছুঁয়ে দিল মন)
শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী: যারা যারিব (প্রার্থনা)। একই শাখায় একই ছবির জন্য বিশেষ পুরস্কার পান: প্রমিয়া রহমান।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: সানী জুবায়ের (অনিল বাগচীর একদিন)
শ্রেষ্ঠ গায়ক: যুগ্মভাবে সুবীর নন্দী (তোমারে ছাড়িতে বন্ধু, চলচ্চিত্র- মহুয়া সুন্দরী) ও এস আই টুটুল (উথাল পাথাল জোয়ার, চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: প্রিয়াংকা গোপ (আমার সুখ সে তো, চলচ্চিত্র- অনিল বাগচীর একদিন)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: আমিরুল ইসলাম (উথাল পাথাল জোয়ার, চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: এস আই টুটুল (উথাল পাথাল জোয়ার, চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুম রেজা (বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: যুগ্মভাবে মাসুম রেজা (বাপজানের বায়োস্কোপ) ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: হুমায়ূন আহমেদ (অনিল বাগচীর একদিন)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: মেহেদী রনি (বাপজানের বায়োস্কোপ)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: সামুরাই মারুফ (জিরো ডিগ্রী)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: মাহফুজুর রহমান খান (পদ্ম পাতার জল)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রতন কুমার পাল (জিরো ডিগ্রী)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: মুসকান সুমাইকা (পদ্ম পাতার জল)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: শফিক (জালালের গল্প)
ছবি: ফোকাস বাংলা