যুক্তরাজ্যের কফি ব্যবসা ও পানকারীদের জন্য অশনি সংকেত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা! একই সঙ্গে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। দেশটিতে কফি বিলাসবহুল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
ডেইলিমেইল বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলছে, উচ্চ তাপমাত্রা, ক্রমবর্ধমান আর্দ্রতা এবং বাজারমূল্য পেরুতে কফি উৎপাদনকারীরা আয়ের জন্য অন্যান্য উৎসের দিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কফি উৎপাদনের জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, কফি গাছে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ ও কীটপতঙ্গ, কফি চাষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে কফি চাষীদের মনোযোগ আখ চাষসহ অন্যত্র সরিয়ে দিচ্ছে।
ইথিওপিয়ায় উৎপাদিত কফির নাম অ্যারাবিকা, আর পেরুও কফি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। পেরুর উত্তরে মূলত কফি চাষ করা হয়৷
পাইউরার উপত্যকা জেলা মন্টেরোতে, পাঁচ বছর আগে এক বিধ্বংসী প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় কফি গাছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কফি এমন প্রাদুর্ভাব। এর ফলে গাছে রাসায়নিক শক্তি বৃদ্ধি করতে প্রতিরোধ করে। ছত্রাকের ঝুঁকি দেখা দেয় প্রতিবছর। এর ফলে গত পাঁচ বছরে এই অঞ্চলে কফির উৎপাদন ৮০ থেকে ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অনেকে এতে আখ চাষের দিকে ধাবিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে বলছেন যে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অর্ধেক জমি কফি চাষে অনুপোযোগী হয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা কফি চাষ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষকদের নতুন সরঞ্জাম এবং বীজ কিনতে সহায়তা প্রদানে অধিক পরিমাণে বিনিয়োগের জন্য কফি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন যে, এর পরিবেশগত ব্যয় মারাত্মক হতে পারে। এমতাবস্থায় কফি উৎপাদনের জন্য নতুন অঞ্চল আবাদ প্রয়োজন।
একই সাথে গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে, এভাবে চললে কফির উৎপাদন হ্রাস পাবে এবং কফির মূল্য যুক্তরাজ্যে উচ্চমাত্রায় যেতে পারে, আবার গুণগত মানও হ্রাস পাবে।
ফেয়ারট্রেড হেড অব কমার্শিয়াল পার্টনারশিপ ক্যাথরিন ডেভিড বলেছেন, যুক্তরাজ্যের জনগণ সত্যিই আশা করছে যে, ব্যবসায়ীরা তাদের কফির জন্য ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করবেন। এটি তাদের জন্য কঠিন কিছু নয়।
“বর্তমানে কফির বিক্রি বেড়েছে এবং এটি একটি খুব জনপ্রিয় পণ্য। আমরা বিভিন্ন দামের ব্যাপ্তি থেকে কফি তুলতে পারি। আমার মনে হয়, আমরা যদি এখনই বিনিয়োগ না করি, তবে কফি বিলাসবহুল ও দীর্ঘ মেয়াদে দুর্লভ পণ্যে পরিণত হতে পারে”।
বর্তমানে কফি উৎপাদনের জমি থেকে যদি ৫০ ভাগ জমি যদি অনুপোযোগী হয়ে পড়ে তা কারো জন্য ভালো হবে না। এতে কফি চাষীরা তাদের কফি চাষ থেকে সরে পড়বে, যা আমাদের কফির প্রয়োজনীয়তা মেটাতে পারবে না।
তারা বলছেন, এটি সত্যি একটা সংকট, যা আমরা মোকাবিলা করছি। যদি যুক্তরাজ্যের জনগণ আরো সচেতন হয় তাহলে এই বিষয়ে সমাধান করা সম্ভব।