চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

কথা রাখবেন তো মিয়ানমারের সেনাপ্রধান?

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে অং সান সু চি সরকারকে উৎখাতের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে; তাতে সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ সরকার এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য না করলেও নানাভাবে স্বীকার করে নিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। যে কারণে চীনের ওপর নির্ভর করছে

তবে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সরাসরিই বলেছে, যে সেনাবাহিনী তাদেরকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করেছে; সেই সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না বলেই তাদের বিশ্বাস। কোনোভাবেই তারা বিশ্বাস করতে চায় না- এত অত্যাচার-নির্যাতনের পর আবার নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে। মোট কথা অনিশ্চিত এক অন্ধকার ঘিরে ধরেছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার ভবিষ্যত।

এমন পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নয়, মিয়ানমারে থাকা আরও প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গাদের সামনে বড় বিপদ। সেই আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্বয়ং জাতিসংঘ। সেনা অভ্যুত্থানের পরের দিনই সেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিকের শঙ্কা, রোহিঙ্গা অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে!

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কিংবা মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে এমন শঙ্কার মধ্যে আশা দেখাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান তথা সামরিক সরকার প্রধান অং হ্লাইং। অভ্যুত্থানের ৮ দিন পর প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছেন তিনি। বলেছেন, ‘মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ফিরিয়ে নেবে তারা।’

অং হ্লাইং এ কথা শুধু টেলিভিশনেই বলেননি, টুইটও করেছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। তবে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেননি মিয়ানমারের সর্বময় ক্ষমতাধর এই জেনারেল। শুধু বলেছেন, ‘আইডিপি ক্যাম্প থেকে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা হবে।’

কৌশলে বলা তার এই বক্তব্য কতটা বাস্তব রূপ পাবে; তা সময়ই বলবে। এই মুহূর্তে আমরা কেউ বলতে চাই না- এটা শুধু কথার কথা। আবার ‘বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি’ বা ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি তিনি ব্যবহার করলেন কি করলেন না; সেই বিতর্কও অপ্রয়োজনীয়। কেননা সারা বিশ্বের কাছে দিনের আলোর মতো পরিস্কার- বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারের নাগরিক। সেই নাগরিকদের সেদেশে ফিরিয়ে নিতেই হবে।

আমরা মনে করি, মিয়ানমার যত দ্রুত তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে; ততই প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের আস্থা-বিশ্বাস ফিরে পাবে। আমরা চাই মিয়ানমার সুপ্রতিবেশী হিসেবে সেই তৎপরতা দেখাবে। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নির্ভর করছে সেনাপ্রধান অং হ্লাইং- এর ওপর।