করোনাভাইরাসের জন্য হতদরিদ্রদের মাঝে সরকারি বরাদ্দের ১৫ টন চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগে কক্সবাজারের পেকুয়ার টইটং ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সাথে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।
পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার রাতে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম।
মামলার বাদী পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই মানবিক সহায়তা হিসেবে পেকুয়া উপজেলাকে ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২৫ মেট্রিক টন চাল বিলি করা হয়। বাকি ১৫ মেট্রিক টন চাল গত ৩১ মার্চ টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী অনুকূলে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়।
করোনা ভাইরাসের কারণে হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া ওই চাল টইটং ইউপি চেয়ারম্যান খাদ্য গুদাম থেকে ৬ এপ্রিল উত্তোলন করেন। কিন্তু চালগুলো উত্তোলন করা হলেও তিনি চাল বিতরণের কোন তথ্য দেননি, মাষ্টাররোলসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেননি। চালগুলো কি করেছেন সে বিষয়ে বারবার জানতে চাওয়া হলেও কিছুই না জানিয়ে টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক রয়েছেন। যার কারণে তার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে স্থানীয় একটি একটি সুত্র জানিয়েছে, চেয়ারম্যান চালগুলো পানির দরে চকরিয়ার এক ডিলারের কাছে বিক্রি করে দেয়।
এদিকে ত্রাণের ১৫ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও টইটং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারাণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বুধবার দুপুরে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আবসার জানিয়েছেন।
সরকারী প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার জেলার টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন আইনানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
উল্লেখিত চেয়ারম্যান কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ মূলক কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করেন। কাজেই স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
একই সময় কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে তার পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাত জানান, ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।