সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অগ্রিম আয়কর হিসেবে আদায় করা ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ফেরতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সে সঙ্গে এই রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে টাকা ফেরত দেওয়ার রায়ও স্থগিত করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের করা রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে আদেশ দেন।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আমিরুল ইসলাম। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার রফিক আহমেদ।
এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া এ সংক্রান্ত রায় বহাল রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা ১১ টি আপিল খারিজ করে গত বছরের ১৬ মার্চ রায় দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। সে রায়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয় হয়েছিল
এস. আলম স্টিলস লিমিটেডকে ৬০ কোটি টাকা
দ্য কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড এবং বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেডকে ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার ২ টাকা ১৭ পয়সা
মেঘনা সিমেন্ট মিলসকে ৫২ কোটি টাকা
বসুন্ধরা পেপার মিলসকে ১৫ কোটি টাকা
ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডকে ৯০ লাখ টাকা
ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজকে ৭০ লাখ টাকা
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসকে ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা
ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নূর আলীকে ৬৫ লাখ টাকা
বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডকে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা
ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে ৩৫ কোটি টাকা
এবং
ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেড ডেভেলপমেন্টকে ১৮৯ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিনেও ওই টাকা ফেরত না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। সে আবেদন আজ আপিল বিভাগ গ্রহণ করে আদেশ দেন।
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের নথি থেকে জানা যায়, ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সাবেক সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অগ্রিম আয়কর হিসেবে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করা হয়। ওই টাকা জমা দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত সরকারি কোষাগারে।