ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাইয়ের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা।
‘ওরে আমার বাবা, আইলো না’ চিৎকার করে কাঁদছেন হাদিসুর রহমানের বৃদ্ধ বাবা-মা।
বুধবার ৯ মার্চ দুপুরে এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ জন ক্রুয়ের সঙ্গে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে না আসায় তার বাবা আব্দুর রহমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এভাবেই বিলাপ করছিলেন।
বুধবার বেলা ১২টায় ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিকদের বহনকারী টার্কিস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৭২২ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে সেখানে যান হাদিসুরের বাবা-মা ও ভাই।
আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার কান্নায় ভেঙে পড়েন। হাতে থাকা ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমার ছেলে।’
হাদিসুর রহমানের স্বজনদের বিলাপ আর আহাজারি বিমান বন্দরের পরিবেশ ভারী করে তোলে।পরিবারের সব চেয়ে মেধাবী সদস্যের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে না পরিবার।
হাদিসুরের মা আমেনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে (ছেলে) ফেরত চাই। সবাই ফিরে এসেছে কিন্তু আমার ছেলে আসেনি আমি আমার ছেলেকে এখনো দেখিনি।’
হাদিসুরের মরদেহ এখনও ইউক্রেনে রয়েছে এবং তার মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিক দেশে ফেরার পর জাহাজটির গ্রুপ ক্যাপ্টেন জি এম নূরে আলম বলেন, অত্যন্ত গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি আমাদের সহকর্মী ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মৃত্যুতে। তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তার মরদেহ হিমঘরে রেখে এসেছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএস অনুবিভাগের মহাপরিচালক শিকদার বদিরুজ্জামান বলেন, হাদিসুরের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তার দেহাবশেষ অতিসত্বর দেশে নিয়ে আসব।
কবে নাগাদ নিয়ে আসা হবে জানতে চাইলে বদিরুজ্জামান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব। এ সময়টা ফিক্সড করে বলা যাবে না। একটা দেশে যুদ্ধ চলছে, সেখানে মানুষ ঢুকতে পারছে না। আমাদের আন্তরিকতা শতভাগ আছে। আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা সবই আছে।
হাদিসুরের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বদিরুজ্জামান বলেন, আমাদের প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল এ ২৮ জনকে উদ্ধার করা। তারপর আমাদের যা করণীয় থাকবে তার সবই আমরা করব। তাদের জন্য যতটুকু করণীয় সেটা আমরা করব। সরকারের তরফ থেকে যতটুকু করার সেটা করব।