সড়কে নৈরাজ্য-বেহাল অবস্থা ও অস্বাভাবিক মৃত্যু ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ দাবি করে রিজভী বলেন, প্রতিদিন দেখছি- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব সারাদেশে ছোটাছুটি করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবের দৌড়াদৌড়ি কেবল ফটোসেশনেই সীমাবদ্ধ। প্রতিদিন সড়কে লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়- সড়কে মৃত্যুর মিছিল। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে সড়কে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হচ্ছে প্রায় ২০ জন মানুষ। দুঃশাসনের কবলে পড়ে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে সড়ক ব্যবস্থা।
সড়কে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, রাজধানীতে একদিকে তীব্র ট্রাফিক জ্যাম, অন্যদিকে পরিবহন নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ মানুষ। নিরাপদ সড়ক দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সরকার লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ এখন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী তো প্রতিদিন বিরোধী দলকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে থাকেন, তিনি গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও অকালে হাজার হাজার প্রাণ ঝরে যাওয়ার রোধ করতে ব্যর্থতার জবাব দেবেন কি? ওবায়দুল কাদের সর্বকালের ব্যর্থ একজন সড়কমন্ত্রী। যেহেতু মন্ত্রণালয় চালাতে তিনি ব্যর্থ, তার নেতৃত্বের কারণে সড়কে শুধু লাশের ছবি, সেহেতু এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে তাকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। নইলে সড়কে মৃত মানুষের আত্মা শান্তি পাবে না।
‘এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি, বিএনপি নেতারা পরাজিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগের সত্ত্বা ও স্বরুপ বরাবরই মিথ্যা দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা, কৃত্রিম লাইন তৈরি করে ভোটাদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতে না দেয়া, মহাজোট ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোটের ফলাফল সরকারদলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ঘোষণা করা, নির্বাচনের আগে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের হয় কারাগারে নয়তো এলাকা ছাড়া করা, এসবই হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ভুয়া ভোটে এমপি-মন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে এখন বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচনকে জায়েজ করতে আওয়ামী নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আলোচনাকে ভিন্ন খাতে ঘুরিয়ে দিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।