এটা সবারই জানা যে, প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপের পরই ‘মাছ ধরতে’ পছন্দ করেন রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেটিনো পেরেজ। ২০১০ বিশ্বকাপের পর মেসুত ওজিল এবং ২০১৪’র হামেস রদ্রিগেজ তো একেবারে গরম উদাহরণ। আরেকটি বিশ্বকাপ শেষের পথে। এবার পেরেজের ‘পছন্দের মাছের’ তালিকায় কে?
রাশিয়া বিশ্বকাপের মাঝপথেই খবর, রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। যে খবর এখনও চলছে। অনেকে বলে খবর পাকা। রোনালদোর জায়গা পূরণ করতে তাই অনেক ফুটবলারদের উপরই চোখ রাখছে রিয়াল। এই তালিকায় যে কারো নামই থাকতে পারে।
রিয়ালের নজরে থাকা ফুটবলারদের মধ্য অন্যতম একজন অবশ্যই এডিন হ্যাজার্ড। বেলজিয়ান তারকার প্রতি দুর্বলতা ছিল গ্যালাকটিকোদের সাবেক কোচ জিনেদিন জিদানেরও।
যে সমস্ত ফুটবলাররা নিজ ক্লাব ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, করছেন এবং রিয়ালের প্রশংসা করেন, করছেন তাদের প্রতি বাড়তি নজর রাখছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তাদেরই একজন হ্যাজার্ড।
বেলজিয়ামের নাম্বার টেন যদি রিয়ালের হয়ে খেলতে না পারেন, তবে সেটা তার চেষ্টার কমতির কারণে হবে না। বরং মাঠ ও মাঠের বাইরে নিজের কাজটা ঠিকঠাকভাবেই করে যাচ্ছেন চেলসি সুপারস্টার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত মৌসুমের নকআউটপর্বে চেলসি ও বার্সেলোনা ম্যাচের সময় থেকেই হ্যাজার্ডের দিকে বেশি নজর দেয় রিয়াল। দুই লেগে দুর্দান্ত পারফর্মও করেন তিনি। যদিও উইলিয়ানের পারফরম্যান্সের কাছে কিছুটা ঢাকা পড়েছিলেন হ্যাজার্ড।
চেলসির নাম্বার টেন ক্লাবের হয়ে গত মৌসুমটা বেশ বাজেভাবে কাটিয়েছেন। ‘দুর্গন্ধপূর্ণ’ ড্রেসিংরুমে অনেক খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচ অ্যান্থনিও কন্তের সম্পর্ক বিষিয়ে যায়।
বিরোধীরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত আটকানোর উপায় হিসাবে হ্যাজার্ডের অসঙ্গতিগুলোকে বড় করে তোলে এবং দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে। তবে হ্যাজার্ডের কাছে দ্বিতীয় সুযোগ হিসেবে আসে বিশ্বকাপ। যে সুযোগ তিনি একটুও নষ্ট করেননি। বেলজিয়ামকে এগিয়ে নেয়ার মিশনে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
শুক্রবার ব্রাজিলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেও হ্যাজার্ড ছিলেন অনবদ্য। গোল না পেলেও সেলেসাওদের বিরুদ্ধে দলের ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন তিনিই।
ব্রাজিল-বেলজিয়াম ম্যাচের মূল ফোকাস তারকা নেইমারকে ঢেকে প্রদীপের আলো প্রায় সবটুকুই নিজের দিকে নিয়ে নেন হ্যাজার্ড। তাকে আটকাতে গিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয় ব্রাজিলের ডিফেন্ডারদের।
ব্রাজিল ম্যাচের প্রথমার্ধে তিনি নিজের দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখল রাখাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ডিফেন্সিভ খেলতে গিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া দলে তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ম্যাচে নিজেদের দম ধরে রেখেছেন।
হ্যাজার্ড একই সঙ্গে নিজের ফুটবল দক্ষতা এবং নেতৃত্বগুণটা দেখিয়েছেন। তার খেলা নেইমারের উপর থেকে রিয়ালের চোখও অনেকটা সরিয়ে দিতে পারে। এটা আজ আর অসম্ভব না। হ্যাজার্ডের বিশ্বকাপ এখনও চলছে, যেখানে নেইমার থেমে গেছেন।
হ্যাজার্ডের পারফরম্যান্সেই যদি বেলজিয়াম বিশ্বকাপ জেতে, তাহলে কী ঘটবে?