প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সংলাপের পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে এসেছে ঐক্যফ্রন্টের অংশীদার বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ২০১৪ সালের মতো তারা নির্বাচন বর্জন না করায় স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের আমেজ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে।
ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণার পর বিএনপি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছিল কয়েকদিন ধরে। এরপরও বিএনপি অভিযোগ করে আসছিল, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। এমনকি ‘সুষ্ঠু পরিবেশ’ না থাকলে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়টি আবারো ভেবে দেখবে বলেও জানিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও একই সুরে কথা বলে আসছিলেন।
এর মধ্যে নয়াপল্টনে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। এরই জের ধরে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেকের নামে মামলা করেছে পুলিশ। এছাড়া কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ রিমান্ডেও নিয়েছে।
এসব ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ওই বৈঠকে সম্পাদকরা পরামর্শ দিয়েছেন, দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ঐক্যফ্রন্ট যেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকে। দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে সম্পাদকদের এই পরামর্শের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করি।
আমরা মনে করি, গণতন্ত্রে নির্বাচনই একমাত্র পথ, এখানে সহিংসতার কোন সুযোগ নেই। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় দেশ কতোটা সহিংসতার দিকে গেছে তাও আমরা দেখেছি। কোন পক্ষের কাছেই গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে সহিংস আন্দোলনের নামে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা আমরা আশা করি না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনই হতে পারে ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র মাধ্যম।
আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে শুধু একপক্ষ নয়, বরং সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকারি দলকেও যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, ঠিক তেমনই বিরোধী জোটকেও সহযোগিতার মনোভাব নিয়েই এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন বর্জন করা, কিংবা বিরোধী পক্ষকে যেকোন মূল্যে হারিয়ে দেয়া যাতে আমাদের মানসিকতা না হয়। শ্রদ্ধার সাথে জনমতের প্রতিফলন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে আমরা সব রাজনৈতিক দল এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।