এক
লাল সবুজের এই বাংলা হাজার বছর ধরেই কৃষিপ্রধান অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। পরিচিত সুজলা সফলা শস্য শ্যামলা দেশ হিসেবে। এর চারদিকে মালার মতো ঘিরে আছে অসংখ্য নদ নদী- খাল বিল- হাওড়- জলাশয়। ফলে এই অঞ্চল প্রাচীনকাল থেকে পরিচিতি পেয়েছে কৃষি প্রধান অঞ্চল হিসেবে। এর সংস্কৃতিতেও তার ছাপ পড়েছে। কৃষির উৎপাদন ব্যবস্থা এবং ঋতুভিত্তিক অঞ্চল হওয়ার কারণে এখানে প্রাচীনকাল থেকেই বৈশাখ মাসের প্রথম দিনকে বছরের প্রথম দিন হিসেবে ধার্য করা হয়েছে। ঐতিহাসিকরা বলছেন, বাংলা সন গণনার সময়পর্ব থেকে বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর এই সংস্কৃতির শুভ সূচনা। তবে সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই বাঙালিরা বিচ্ছিন্ন ও বিভিন্নভাবে এই দিনটি পালন করতো। পহেলা বৈশাখ দিনটি যতটা ধর্মীয় অনুভূতিসিক্ত, তারচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে একে বিবেচনা করা হয় বাঙালির সর্বজনীন সংস্কৃতির দিন হিসেবে। জানা যায়, সম্রাট আকবরের শাসন কালে বাংলা-উড়িষ্যায় বিভিন্ন সনের প্রচলন ছিল। এগুলো ছিল ইলাহি সন, ফসলি বা মৌসুমি সন ও বিলায়েতি সন। সেসময় ঘরে ফসল তোলার সময়ের সঙ্গে খাজনা আদায়ের সময়টি সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ার কারণে মানুষজনকে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হতো। আর একারণে সম্রাট আকবর তার সময়ের সেরা জ্যোতিষ আমির ফতেউল্লাহ্ সিরাজিকে এবিষয়টির একটি সমাধান দেয়ার নির্দেশ দেন। সিরাজি সবদিক বিবেচনায় রেখে হিজরি সনের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করে ‘তারিখ-ই-ইলাহি’ উদ্ভাবন ও প্রচলন করেন। পরবর্তীতে যা বঙ্গাব্দরূপে পরিচিত ও গৃহীত হয়।
বাংলা সনের প্রথম মাস হিসেবে বৈশাখকে নিয়ে বাঙালির জীবনে অফুরান উচ্ছ্বাস, আবেগ আর ভালোবাসা। বৈশাখের শুরুতেই বাঙালি এই মাসকে হৃদয়ের গভীরের যত ভালোবাসা আছে তা নিয়ে বরণ করে নেয়। বৈশাখ নিয়ে বাঙালি জনমানসে রয়েছে আলাদা এক জায়গা।
নানা কারণে বৈশাখ আমাদেরকে আলোড়িত করে। বৈশাখ তার নিজস্ব ঢঙে মানুষকে উদ্দীপিত করে। একইসঙ্গে বৈশাখের উন্মাতাল রূপ প্রকৃতিকে ভিন্নমাত্রাও এনে দেয়। ফসল কাটা, ফসল তোলার অগ্রহারণের স্নিগ্ধ, পরিপাটি রূপ-মাধুর্য মানুষের মনে নতুন বছরের সূচনার আমেজ এনে দেয়। উঠানে নতুন খড়ের ঘ্রাণ, ঘরে নতুন চালের ম-ম সুবাস আর পিঠে পায়েসের স্বাদ চারদিকে ছড়িয়ে দেয় আনন্দের এক বন্যা। আনে নতুন প্রাণের ছন্দ। বৈশাখ প্রকৃতির মাঝেও সঞ্চার করে নব বার্তার। নব সৃষ্টির গান। বৈশাখের ছোঁয়ায় প্রকৃতিও যেন তখন মেতে ওঠে চৈতালীনন্দে। এসবের বিপরীতে প্রখর গ্রীষ্মের বৈশাখ তার বহু বিচিত্র রূপে, শক্তিতে প্রকৃতিকে বিপর্যস্ত করে অন্যদিকে সাধারণের মধ্যে নতুন এক বার্তা পৌঁছে দেয়।
কী সেই বার্তা?
সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া মানে একেবারে শেষ হয়ে যাওয়া নয়। বাঙালির জাতিসত্তা বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই এক গৌরবময় ইতিহাস। হাজার বছরের বাঙালির মধ্যে রয়েছে এক সংগ্রামী চরিত্র- বাঙালি ধ্বংস ও বিপর্যয়ের মধ্যেও নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। অন্যায়- নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। ধ্বংসস্তূপের ভেতরেও সে নতুন প্রাণের সন্ধান করে। নতুন কিছু তৈরি করার প্রেরণা খোঁজে। মূলত বৈশাখের রুঢ়- তাণ্ডব এবং এর পরবর্তীতে মানুষের ঘুরে দাঁড়ানো-সবকিছুই এক সুতোয় গাঁথা। হাজার হাজার বছর ধরে বাঙালি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করেছে তেমনি প্রকৃতির শত বাধা-প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও প্রমাণ করেছে বাঙালি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে জানে। সে জয়ী হতে জানে। বাঙালি তাই বীরের জাতি।
বৈশাখের প্রচণ্ড রুদ্রমূর্তি বাঙালিকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বেঁচে থাকার সর্বস্বকে কেড়ে নিয়েছে কিন্তু তাই বলে বাঙালি থেমে থাকেনি। সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার কারণে সে নতুন করে যুদ্ধ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছে। বৈশাখ বাঙালির মধ্যে একইসঙ্গে দুধরনের প্রতিক্রিয়া প্রোথিত করেছে। সর্বস্ব হারিয়ে সে যেমন অসহায় ও বিপর্যস্ত হয়েছে তেমনি সৃষ্টিশীলও হয়েছে। আর এসবের পেছনে বাঙালিকে জীবনযুদ্ধে নামাতে শিখিয়েছে বৈশাখের রুদ্রমূর্তি।
তাহলে বৈশাখ কী বাঙালিকে যুদ্ধের প্রেরণা দিয়েছে! মন্ত্রণা দিয়েছে! এরকম কথার পৃষ্ঠে বলাই যায়, হ্যাঁ, বৈশাখ বাঙালির মধ্যে এক ধরনের যুদ্ধ করার মন-মানসিকতা তৈরি করে দিয়েছে। তাকে নতুন উদ্যমে করেছে বেগবান। বিরুদ্ধ প্রকৃতির বিপরীতে লড়াই করে টিকে থাকার নাম বৈশাখ। শুধু তাই নয়, বৈশাখ বাঙালির সৃজনীশক্তিকে বহু রঙে রাঙিয়েও দিয়েছে। বৈশাখে তাই প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্নরূপে ধরা দেয়। এ যেন প্রকৃতির অচেনা এক রূপ।
রবীন্দ্রগবেষক, প্রাবন্ধিক ও ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক বৈশাখের বিচিত্র রূপ লিপিবদ্ধ করতে গিয়ে লিখেছেন,’বেলা বাড়তেই ঝাঁ-ঝাঁ রোদের বৈশাখী দিন গ্রীষ্মের দাবদাহ নিয়ে উগ্র মেজাজে যে অস্তিত্ব ঘোষণা করে তাতেই বৈশাখের প্রকৃত পরিচয় ফুটে ওঠে। একদিকে শূন্য মাঠে ফসলের বীজ বোনার প্রস্তুতি, অন্যদিকে প্রকৃতির ভিন্নরূপে সজ্জা-একদিকে গুমোট উত্তাপ আর অন্যদিকে প্রায়ই বৈকালি ঝড়ো হাওয়ার তাণ্ডব অগ্নিক্ষরা বৈশাখী দিনকে দ্বৈত রূপের অসামান্যতায় তুলে ধরে। দুপুর শেষ হতে না হতেই আকাশে কালো মেঘের হঠাৎ আবির্ভাবে কালবৈশাখীর প্রস্তুতি। কখনো ঝড়ো হাওয়ার নাচন, কখনো প্রবল বর্ষণে হঠাৎ শীতের কাঁপন দিনের চরিত্র পালটে দেয়। মনে জাগে স্বস্তির আমেজ। তবে গ্রীষ্মের ক্যানভাস রচনার ক্ষেত্রে বৈশাখী বন্দনায় রবীন্দ্রনাথের তুলনা মেলা ভার। বৈশাখী দিন নিয়ে ভাবতে গেলে মনে পড়ে যায় ষাট-পঁয়ষট্টি বছর আগেকার পহেলা বৈশাখের উৎসব-অনুষ্ঠানের প্রতীক মেলার কথা। ঝাঁ ঝাঁ রোদে ঝিম ধরা তপ্ত দুপুর শেষে হঠাৎ করে আকাশ জুড়ে হাওয়ার তাণ্ডব শেষ চৈত্র বা পহেলা বৈশাখের দিনটিকে তখন প্রায়ই বিশেষ করে তুলেছে। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে কী আবেগ নিয়ে অশ্বত্থতলার বৈশাখী মেলায় যাওয়া রকমারি জিনিস কেনাকাটা। গ্রামের সে মেলায় বড় ছোট সবারই ছিল আসা-যাওয়া। আর প্রায় প্রতিবছরই বিকেলে দোকানপাট গুটিয়ে দোকানিদের পাশের গ্রামের বিশাল অশ্বত্থতলায় মেলার আয়োজন ভণ্ডুল করে দিয়েছে কালবৈশাখীর ঝড়।’
দুই
বাঙালির জীবনে বৈশাখ তার বহুবিচিত্র প্রভাব এঁকে দিয়েছে। এই প্রভাবকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বৈশাখের রুঢ় প্রকৃতি ও প্রান্তিক জীবনের টানাপড়েন সবকিছু বড় মোটা দাগে প্রতিভাত হয়েছে আমাদের সৃষ্টিশীল রচনায়। বাঙালির যাপিত জীবনে বৈশাখ এক দীর্ঘ ছায়া ফেলে রেখেছে। সাহিত্যবোদ্ধারা সবাই একবাক্যে স্বীকার করছেন যে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাই বৈশাখের সব রূপ-রস-গন্ধকে ধারণ করে আছেন। তার মতো এমন করে বৈশাখকে অন্য কোনো বাঙালি কবি উপলব্ধি করতে পেরেছেন কিনা, কিংবা তুলে ধরতে পেরেছেন কী না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সমস্ত বোধ দিয়ে, উপলব্ধি দিয়ে, অনুভব দিয়ে বৈশাখকে স্পর্শ করে গেছেন।
রবীন্দ্রনাথ তার কবিতায় শেষ চৈত্রের কালবৈশাখীকে দারুণভাবে চিত্রায়িত করেছেন। কালবৈশাখীর চিত্র আঁকতে গিয়ে ‘ উড়ে যায়, দূরে যায় বিবর্ণ বিশীর্ণ জীর্ণপাতা’ কিংবা ‘ধুলো আর তৃণের মতো পুরনো বছরের নিষ্ফল সঞ্চয়’ এ রকম অসংখ্য হৃদয়-জাগানিয়া প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন কবিগুরু। হৃদয়-জাগানিয়া না হলে তিনি কী করে অনুভব করেন,
‘বৈশাখের এই ভোরের হাওয়া আসে মৃদুমন্দ।
আনে আমার মনের কোণে সেই চরণের ছন্দ॥
স্বপ্ন শেষের বাতায়নে হঠাৎ আসা ক্ষণে ক্ষণে
আধো ঘুমের প্রান্ত-ছোঁয়াও বকুলমালার গন্ধ॥‘
বস্তুত কবিগুরু রুদ্র বৈশাখের মধ্যে রোমান্টিকতা খুঁজতে চেয়েছেন।
পেয়েছেন কী? বৈশাখের মধ্যে রোমান্টিকতা খুঁজতে গিয়ে কবি এক নতুন জগতের সন্ধান পেয়েছেন। বৈশাখী প্রকৃতির মধ্যে যে অপরূপ মায়াবী রূপবিভা লুকিয়ে আছে তা কবিকে মুগ্ধ করেছে। কবির মনকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। বৈশাখের ভেতর কবির প্রেমিক মন গভীরভাবে নিমজ্জিত হয়েছে। বৈশাখী ঝড়কে কবি কখনো কখনো হৃদয়ের একান্ত ঘনিষ্ঠ বলেও চিত্রিত করেছেন।
নতুন বছরের আগমনকে ঘিরে বিশেষ করে বৈশাখকে সামনে রেখে কবির অন্তরে বয়ে যায় এক বিচিত্র উপলব্ধি। কবি গভীরভাবে বিশ্বাস করেন বৈশাখ যেন বাঙালির আটপৌরে জীবন থেকে সংস্কার আবেগ, অন্ধতা, কর্মহীনতা, ঝরা, প্রাপ্তি হতাশা সবকিছুকে ঝেঁড়েমুছে নিয়ে যাবে। ‘তাপস নিঃশ্বাস বায়ে মুর্মুষূরে দাও উড়ায়ে / বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক-‘ বলেই কবি থেমে থাকেননি। কবির গলায় আরও উচ্চারিত হয়,
‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুছে যাক জরা
অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা।
রসের আবেশ রাশি। শুষ্ক করি দাও আনি,
আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।’
বৈশাখী কী তবে মৌনি তাপস? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিন্তু সে কথাও বলেছেন। বৈশাখকে রবীন্দ্রনাথ ‘ মৌনি তাপস’ রূপে আঁকতেও দ্বিধা করেননি। কবি তার জীবদ্দশায় কার্যোপলক্ষে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। তখন তিনি খুব কাছ থেকে বাংলার মানুষকে, বাংলার প্রকৃতিকে দেখেছেন। বড় অদ্ভুত আর বড় মধুর তার সেই পর্যবেক্ষণ। বাংলার মানুষের জীবন ও এর প্রকৃতিকে কত গভীর উপলব্ধিতে যে তিনি দেখতে পেরেছিলেন তা তার গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, গান, উপন্যাস, পত্রাবলী পড়লে অনুভব করা যায়। কবির হাতে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে রূপের আঁধার,
‘ধূসর পাংশুল, ধেনুগণ ঊর্ধ্বমুখে,
ছুটে চলে চাষি,
পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন মেঘে সায়াহ্নের পিঙ্গল আভাস
রাঙাইছে আঁখি,
বিদ্যুৎ-বিদীর্ণ শূন্যে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলে যায়।
উৎকণ্ঠিত পাখি।’
তিন
আমাদের দেশে বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় পরিবারের মাধ্যমে। পরে তা বিস্তৃত হয় আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধব, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবেশীদের মধ্যে। নববর্ষকে কেন্দ্র করে গ্রাম- শহরে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। বছর শুরুর আগের দিন বসে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা বসে। এসব মেলায় কি না পাওয়া যায়! শখের খেলনাপাতি থেকে শুরু করে প্রসাধন সামগ্রী, ঘর সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় সাজ-সরঞ্জামাদি সবকিছুর আমদানি হয় এই মেলায়। চরকি, নাগরদোলা, বাঁশের কঞ্চির বাঁশি, চুড়ি, ফিতে, চুলের ক্লিপ, আলতা, কাজল, দা, বঁটি, চালুনি, কুলো, টুকরিসহ দুনিয়ার রকমারি জিনিসপত্রের সমাহার ঘটে। এসব কেনার জন্য আগ্রহীরা উপচে পড়ে। আর পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে গরীব দুঃখীর ঘরে সাধ্য অনুযায়ী ভালোমন্দ খাবার দাবারের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। এদিন মিষ্টিমুখের মাধ্যমে খোলা হতো বিশেষ হালখাতার যা বর্তমান সময়েও চালু আছে। এই হালখাতায় পুরনো হিসেব চুকিয়ে নতুন হিসেবের খতিয়ান লিখে রাখা হয়।
চার
সময় বদলেছে। বিবর্তন আর পরিবর্তনের ছোঁয়ায় পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অনুষঙ্গে এসেছে নতুনের আবাহন। আবহমান নিয়মকানুনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমকালীন নানা অনুষঙ্গ। দেশজ অনুষঙ্গের সঙ্গে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির কিছু অংশ যুক্ত হয়েছে। তবে তাতে করে সব পুরনোকে ধুয়েমুছে সরিয়ে দিতে চাইলেও সবক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়নি। নতুন যুক্ত হওয়া এসব অনুষঙ্গ বাঙালির হাজার বছরের শাশ্বত সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বন্ধনকে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে পারেনি। চিরন্তন সত্য সবসময় মাথা উঁচু করে তার শ্রেষ্ঠত্বকে ধরে রাখে। বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য, গৌরব কখনো ম্লান হওয়ার নয়। কালের ধুলোয় তা কখনো ধূসর হয় না। যত দিন যাবে পহেলা বৈশাখ তার আপন ঔজ্জ্বল্যে, আপন সৌন্দর্যে, আপন শক্তিতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়বে আর দিকে দিকে ধ্বনিত হবে এসো হে বৈশাখ, এসো হে বৈশাখ …
তথ্যসূত্র: নানা আলোয় রবীন্দ্রনাথ ২য় খণ্ড, আহমদ রফিক
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)