আলমত নষ্ট করা থেকে শুরু করে জজ মিয়া নাটক। হামলার পরিকল্পনাকারী থেকে শুরু করে বাস্তবায়নকারীদের বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা। এমনকি হামলার শিকার ব্যক্তিদের ওপরই দায় চাপানো– এসবই ঘটেছিল এক সময় রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা শীর্ষ ব্যক্তিদের ইশারায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। আইনের দীর্ঘ লম্বা হাত থেকে বাঁচতে পারেনি তারা। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সেইসব ব্যক্তির হামলার দায়ে বিচারের মুখোমুখি হতেই হয়েছে।
এখন অপেক্ষা ১৪ বছর আগের ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ভয়াবহ, বর্বরোচিত এবং নৃশংস সেই গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের। আগামী ১০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওই হামলায় ২৪ জন নিহত হয়। মূলত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ওই সময়ে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
আমরা জানি, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে হামলার প্রায় চার বছর পর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে ২২ জনকে আসামি করে এই মামলায় প্রথম চার্জশিট দিয়েছিল সিআইডি। এমনকি ওই বছরেই এসব আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচারকাজও শুরু করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
তবে ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে অধিকতর তদন্তের নির্দেশে দেন আদালত। এর দুই বছর পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই অধিকতর তদন্তে পাল্টে যায় মামলার গতিপথ। সিআইডির তদন্তে উঠে আসে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনের নাম। সেই তদন্তে আমরা জানতে পারি কিভাবে রাষ্ট্রের ক্ষমতা অপব্যবহার করে একটি অশুভ শক্তি এত বড় একটা হামলা চালিয়েছিল। অনেকই তা শুনে অবাক, স্তম্ভিত হয়ে যায়।
এই হামলায় এদেশীয় চক্রান্তকারীদের সাথে হাত মিলিয়েছিল পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইসহ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনা এবং স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিকে শেষ করে দেয়া। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।
আমরা মনে করি, এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে সেইসব ষড়যন্ত্রকারীর সাজা নিশ্চিত হবে। তাদের এমন সাজা হওয়া উচিৎ যেন, ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠি এই ধরনের হামলা চালানোর সাহস না পায়।