ভিনগ্রহের কোনো সভ্যতা থেকে আসা সংকেত সনাক্ত করা গেছে – এমনই দাবি করেছেন দুই মহাকাশবিদ। তবে একটা দু’টো নয়, মোট ২৩৪টি ভিন্ন ভিন্ন সংকেত পাওয়ার দাবি করেছেন তারা!
কুইবেকের লাভাল ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানী এরমানো বোরা। ২০১২ সালে তিনি প্রস্তাব করেন, হয়তো লেজার রশ্মির মাধ্যমেই ভীনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীরা প্রথম যোগাযোগ করবে মানুষের সঙ্গে।
বোরার প্রস্তাবনা অনুযায়ী, যে নক্ষত্রের গ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণীর সভ্যতা থাকবে, সেখান থেকে নক্ষত্র থেকে আসা আলোর বর্ণালীতে নির্দিষ্ট সময় পর পর আলোক তরঙ্গের ঝলকানি আলাদা করে যোগ হবে।
ঝলকানিটা প্রাকৃতিক নয়। সেটা হবে বুদ্ধিমান প্রাণীদের পাঠানো সংকেত, যা ক্ষীণ হলেও প্রাকৃতিক বর্ণালী থেকে আলাদা করে চেনা যাবে। আলোক তরঙ্গ ও সংকেতের গাণিতিক বিশ্লেষণ করে সংকেতটি আলাদা করে সনাক্ত করতে পারবে মানুষ।
বোরা জানান, মানুষ চাইলে লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির হিলিয়োস লেজার ব্যবহার করে এ ধরণের সংকেত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারে, যদি নিজের অবস্থান প্রকাশ করতে চায়।
নিজের অধীনে কাজ করা গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী এরিক ট্রটিয়ারকে বোরা নির্দেশ দেন এ ধরণের সংকেত পাওয়া যায় কিনা তা খুঁজে দেখতে।
ট্রটিয়ার ২৫ লাখ তারা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে মোট ২৩৪টি নক্ষত্র চিহ্নিত করেন, যেখান থেকে বোরার ব্যাখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংকেত ধরা পড়েছে। ২৩৪ নক্ষত্রের বেশিরভাগেরই স্পেক্ট্রাম ক্লাস বা বর্ণালী শ্রেণী আমাদের সূর্যের মতো।
এখান থেকে বোরা দৃঢ়ভাবে ধারণা প্রকাশ করেছেন, সংকেতগুলো প্রাকৃতিক নয়, অবশ্যই ভীনগ্রহের কোনো বুদ্ধিমাণ প্রাণীর পাঠানো সংকেত এগুলো।
তবে অন্য অনেক মহাকাশবিদই এতটুকু প্রমাণে সন্তুষ্ট নন। তারা বলছেন, বুদ্ধিমান এলিয়েনের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও প্রমাণ দরকার। বোরার চিহ্নিত তারাগুলো পর্যবেক্ষণ করে ব্রেকথ্রু লিসেন ইনিশিয়েটিভ নামে মহাকাশবিদদের একটি সংগঠন সিদ্ধান্তে এসেছেন, তারাগুলো থেকে পাওয়া বিশেষ ধরণের সংকেতগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
অবশ্য তা মানতে রাজি নন এরমানো বোরা আর তার শিষ্য এরিক ট্রটিয়ার। তারা নিশ্চিত, গবেষণা চালিয়ে গেলে অবশ্যই তাদের ধারণার সত্যতা প্রমাণিত হবে।