রোমান বীর জুলিয়াস সিজারের মতোই বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান বলতে পারেন, ভিনি-ভিডি-ভিসি বা এলাম-দেখলাম-জয় করলাম। অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ ওয়ানডে জয়ের নায়ক মুস্তাফিজের জীবনেও একজন নায়ক আছেন যাকে সামনে রেখে তিনি পেয়েছেন বেড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা ।
সাতক্ষীরার এই ১৯ বছর বয়সী বাঁ-হাতি পেসারের স্বপ্নের নায়ক পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ২৩ বছর বয়সী আরেক বাঁ-হাতি পেইসার মোহাম্মদ আমির। বৃহষ্পতিবার দুইবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত’কে চমকে দেয়া মুস্তাফিজ যখন তার স্বপ্নের নায়কের নামটি বললেন, মধ্যরাত পেরুনো সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংবাদ-কর্মীরা আরো একবার চমকে উঠলেন।
ম্যাচ-ফিক্সিং এর অপরাধে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডে কারাবাস এবং পরবর্তীতে পাঁচ বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন গ্রেট ওয়াসিম আকরামের যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে বিবেচিত মোহাম্মদ আমির। সেই বখে যাওয়া কলংকিত নায়কই কিনা ‘টিম-টাইগার্সে’ র নতুন নায়কের আইডল !!!
বাংলাদেশের কাছে হারের লজ্জায় বিপর্যস্ত, তারপর তরুণ মুস্তাফিজের এই সরল স্বীকারক্তি ভারতীয় মিডিয়াকে একেবারেই ধন্ধে ফেলে দেয়। এক ভারতীয় সাংবাদিকতো প্রশ্নই ছঁড়ে দিলেন, মুস্তাফিজ আপনি জানেন মোহাম্মদ আমির কোন অপরাধে কি শাস্তি ভোগ করছে ? অবিচল মুস্তাফিজের অকপট উত্তর, ‘তার পরিণতি জানা আছে আমার। তবে আমি তার গতি এবং বৈচিতত্র্যময় বোলিং এর ভক্ত। গতি’র হেরফের ঘটিয়ে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার তার কৌশলের ভক্ত আমি।’
যাকে আদর্শ মানেন সেই মোহাম্মদ আমিরের সাফল্যের সেরা অস্ত্র ‘অফ-কাটার’কে মুস্তাফিজ যে খুব দ্রুতই রপ্ত করে ফেলেছেন তা ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে দেখেছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়া। এবার টিম-টাইগার্সের এই উঠতি টাইগারের এগিয়ে যাওয়ার পালা।
বাংলাদেশের অবিস্মরনীয় জয় পাওয়া ম্যাচে অসাধারণ এক রেকর্ড গড়েও ‘মুস্তাফিজ-দ্যূতিতে’ চাপা পড়ে গেছে টেস্ট -ক্যাপ্টেন মুশফিকুর রহিমের কীর্তি। মুস্তফিজ যেমন পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তেমনি উইকেটের পেছনে পাঁচ ক্যাচ নিয়েছেন ইনজুরি আর ব্যাটে রানের জন্য লড়াই করা মুশফিকুর রহিম।
শুরুতে দুই ভারতীয় ওপেনারের সহজ দুই ক্যাচ ধরতে না পারলেও,পরে মুশফিকের সেই ব্যর্থতার দায় মোচন হয় পাঁচ-পাঁচটি ক্যাচ নিয়ে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ম্যাচে কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের সর্বাধিক পাঁচ ক্যাচ নেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।