চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এমন কঠোর শাস্তিই তাদের প্রাপ্য

প্রশ্নফাঁস ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া অপরাধীদের প্রতি কঠিন ও কঠোর অবস্থান নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। নানা সময়ে অসদুপায় অবলম্বন ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন বিভাগের ৬৩ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শৃঙ্খলা পরিষদ।

কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছি এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনায় আরও ১৫ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৮ জন। এর আগে গত বছরের জুনে ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১২৫ জনকে আসামি করে চার্জশীট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ – সিআইডি। যাদের ৮৭ জনই ছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী। যাদের সবার বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বা শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

শুধু প্রশ্নফাঁস ও পরীক্ষায় জালিয়াতির অপরাধে নয়, ছিনতাই ও মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ১৩ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা আজকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসব শিক্ষার্থীকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না – তা জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে হাজি মুহম্মদ মুহসীন হলে অস্ত্রসহ আটক ৪ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

এতো সংখ্যক শিক্ষার্থীকে শাস্তির এই পদক্ষেপের অর্থ হচ্ছে, যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কঠোর মনোভাবের বহি:প্রকাশ। তাদের প্রতি বার্তা, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। এতে কোনো সন্দেহ নেই – জাতির সবচেয়ে গর্বিত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দেশের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে এমন কঠোর পদক্ষেপই আশা করে। আর এ জন্যই ঢাবি কর্তৃৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। নানাভাবে সমর্থন করেছেন।

আমরা জানি, ২০১৬ সালের ভর্তি পরীক্ষায় সেই জালিয়াতির আগে কোনো রকম বিতর্ক ছাড়াই ঢাবি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষভাবে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে এসেছে। যেখানে মেধাবীরা তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে স্থান করে নিয়েছে। মূলত ঢাবির দীর্ঘ বছরের অর্জিত সম্মান-মর্যাদাকে এক দল অর্থলোভী, কুচক্রী প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। আর দুঃখজনকভাবে তাতে যুক্ত ছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিরই বেশ কিছু নীতিভ্রষ্ট শিক্ষার্থী।

শৃঙ্খলা পরিষদ আজ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট এই শাস্তি অনুমোদন দিলে তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করবে। আমরা মনে করি, ওই সব অর্থলোভী, কুচক্রী ও নীতিভ্রষ্টদের এই শাস্তিই প্রাপ্য ছিল। কেননা তাদের অপরাধের কোনো ক্ষমা থাকতে পারে না।