শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তি করায় সংসদে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা। বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি ক্ষমা চান।
রাঙ্গা বলেন: মাননীয় স্পিকার, আমি একটা ভুল করেছি, এজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। জাতির পিতাকে নিয়ে কিছু বলে থাকলেও আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
নূর হোসেনকে কটূক্তি করায় এর আগেও এক বিবৃতির মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রাঙ্গা।
গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘‘গণতন্ত্র দিবস’র এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাকে হত্যা করলেন? নূর হোসেন কে? নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেন্সিডিলখোর।’’
ওই সভায় রাঙ্গা আরও বলেন, ‘‘নূর হোসেনকে নিয়ে গণতান্ত্রিক দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নাচানাচি করে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির গণতন্ত্রটা হলো এমন, যারা অতি ফেন্সিডিলখোর, ইয়াবাখোর, যারা ক্যাসিনোর ব্যবসা করে, তারাই হলো গণতন্ত্রের সোনার সন্তান। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখবেন নূর হোসেন দিবস। সেই নূর হোসেন চত্বর এরশাদ করেছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এরশাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক ছিলেন।’’
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সেই সময়ের সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন যুবলীগ নেতা নূর হোসেনসহ নূরুল হুদা বাবু ও ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো।
এখন সেই জায়গাটি শহীদ নূর হোসেন স্কয়ার নামে পরিচিত। বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লিখে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা।
সেই ঘটনার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে ওঠে। তার তিন বছর পর ১৯৯০ সালের শেষ দিকে বিদায় নিতে বাধ্য হন স্বৈরাচার এরশাদ।