চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এবার চালের মতোই লাগামহীন সবজির দাম

এবার চালের দামের উর্ধ্বগতির পথ অনুসরণ করে চলছে সবজি। দুয়েকটি সবজি ছাড়া বাকি সব সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত। চাল ব্যবসায়ীদের মতো এক্ষেত্রে সবজি ব্যবসায়ীরাও অতিরিক্ত দামের বিষয়ে একে অন্যের উপরে দায় চাপাচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছে পাইকাররা দাম বাড়ায়, আর পাইকাররা বলছে উৎপাদন পর্যায়ে দাম বাড়ায় তারাও দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক খানাখন্দে ভরা থাকায় পরিবহন ব্যয় বেড়েছে বলে দাবি করছেন সবজির পাইকাররা। আর এ কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে বলে মন্তব্য তাদের। কবে নাগাদ দাম কমতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে শীতের সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা তেমন একটা নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন পাইকারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মুরগীর দামও। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা। শশা, ঢেঁড়স, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এছাড়া পটল, কাকরোল ও কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।বাজারে শীতের আগাম সবজি হিসেবে বাঁধাকপি আসলেও দাম বেশ চড়া। ছোট আকারের প্রতিপিচ ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

মুরগীর দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। কোরবানি ঈদের পর মুরগীর দাম কিছটা কমে গেলেও তা আবার বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়, লেয়ার মুরগি ১০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় আর পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে।

কোরবানীর পর গরু ও খাসির মাংসও বিক্রি শুরু হয়েছে এ সপ্তাহ থেকে। গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে।

তবে আগের সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় দরে। আমদানি করা রসুন ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা, আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে।

দাম বাড়ার বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ কম নয়। মৌসুম শুরু না হলেও শীতের কয়েকটি সবজি ইতোমধ্যে বাজারে এসেছে। কিন্তু পাইকারদের কাছ থেকে সব সবজিই বেশি দামে কিনতে হয় বলে খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়ে যায়।

হাতিরপুলের খুচরা ব্যবসায়ী দুলাল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, বাজারে সবজির পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে। কিন্তু পাইকাররা কোন কারণ ছাড়া শুধু শুধু দাম বাড়াচ্ছে। এ কারণে আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

খুচরা ব্যবসায়ীদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সবজির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহজাহান মোল্লা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বাজারে এখনও শীতের সবজি আসেনি।  এছাড়া উৎপাদন পর্যায়ে দাম বাড়ছে। রাস্তা-ঘাট খানাখন্দে ভরা।  তাই ট্রাক ভাড়া বেড়েছে। সেজন্য দাম কিছুটা বেশি।

কম দামে সবজি পেতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান এই পাইকারি বিক্রেতা।