চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এবার ঘরে বসে অনলাইনে লাইসেন্স পাবেন চাল ব্যবসায়ীরা

চাল ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে ও অল্প সময়ে লাইসেন্স পান সেজন্য নতুন একটি অ্যাপ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই অনলাইনে তাদের ব্যবসার লাইসেন্স করতে পারবেন। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়: বর্তমানে সনাতন পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে। এতে এক দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরে চিঠি চালাচালি করতে অনেক সময় ব্যয় হয়। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদেরও অধিদপ্তরে একাধিকবার আসতে হয়। এ কারণে বাড়তি সময় এবং অর্থ ব্যয় হয়। এই জটিলতা দূর করতে অ্যাপ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

‘‘এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ই-লাইসেন্স অ্যান্ড ফুড ফ্রেন্ডলি প্রোগ্রাম ম্যানেজ সিস্টেম’। অ্যাপটির বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করছে সরকারি প্রোগ্রাম অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)।’’

জানা গেছে, অ্যাপটি কেনার জন্য ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে অধিদপ্তর। চলতি মাসেই টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রেতা আহ্বান করা হতে পারে। অ্যাপ চালু করা হলে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নেয়ার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে বারবার আসা লাগবে না। ঘরে বসেই অনলাইনে ব্যবসার বিস্তারিত তথ্য পূরণ করে আবেদন করলে লাইসেন্স দেয়া হবে। তবে প্রিন্ট কপিটি নেয়ার জন্য একবার যেতে হবে অধিদপ্তরে।

এখন আবেদন করলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভেরিফিকেশন বা যাচাই-বাছাই করে লাইসেন্স দেয়া হয়। কিন্তু অ্যাপটির কার্যক্রম চালু হলে আগে লাইসেন্স দেয়া হবে। পরে ভেরিফিকেশন করা হবে। এতে ব্যবসায়ীরা লাইসেন্স নিতে আরো বেশি আগ্রহী হবে বলে মনে করে খাদ্য অধিদপ্তর।এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের একজন উদ্ধর্তন কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা যাতে সহজেই লাইসেন্স পান, সেজন্যই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি এখনও প্রক্রিয়াধীন। মূলত ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নিতে আগ্রহী করে তুলতে এই অ্যাপ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

চলতি বছরে দফায় দফায় চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আমদানি শুল্ক কমানোসহ বাকিতে চাল কেনার সুযোগ দেয়া হয় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এরপরও দাম না কমায় বিভিন্ন চাল মোকামে অভিযান চালানো হয়।

এরপর দেশে ব্যবসায়ীদের কাছে চাল মুজদের পরিমাণ জানতে অক্টোবরের শুরুর দিকে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন: ৩০ অক্টোবরের মধ্য চাল ও গম ব্যবসায়ী, চালকল মালিক, আড়তদার, মজুতদার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের খাদ্য অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এক মেট্রিক টনের অধিক যারা ব্যবসা করে তাদের এ লাইসেন্সের আওতায় আসতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রীর এই নির্দেশের পর ওই মাসে মাত্র ১৮৯ জন ব্যবসায়ী লাইসেন্স করেছেন। অবশ্যই আরো ৩শ থেকে ৪শ লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে। তবে লাইসেন্স করার বিষয়টি এখনও জানে না অনেক ব্যবসায়ী। এছাড়া লাইসেন্স করলে অতিরিক্ত ঝামেলায় পড়বেন বলে মনে করেন তারা।

অ্যাপটির বিষয়ে হাতির পুলের চাল ব্যবসায়ী রবিউল হাসান বলেন: এসব সুবিধা থাকলে এই অ্যাপের মাধ্যমে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে। তবে অফিসে না গিয়ে বাসায় বসে কিভাবে আবেদন করা যাবে তা ব্যবসায়ীদের জানাতে হবে।

কারওয়ান বাজারে চালের দোকান

এ লাইসেন্সের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কোনো উপকার তো নয় বরং ঝামেলা বাড়বে বলে মনে করে কারওয়ান বাজারের চালের আড়ৎদার জসিম উদ্দিন। তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: লাইসেন্স নিলে ১৫ দিন পর পর চালের মজুদ সম্পর্কে সরকারকে জানাতে হবে। এতে সময় নষ্ট ও খরচ বাড়বে। বাড়তি ঝামেলা তৈরি হবে।