একবার এক চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং কাহিনীকার নির্জন দ্বীপে অবকাশ কাটাতে গেলেন। দ্বীপটার শেষপ্রান্তে একটা গুহায় অলৌকিক একটা পাথর দেখতে পেলেন তারা তিনজন। পাথরটার অদ্ভুতরকম শক্তি ছিল। তিনজনকেই গায়েবী নির্দেশ দেয়া হলো- যে কোন একটা করে ইচ্ছেপূরণ করতে পারবে। প্রথমে পাথরটা ঘষে নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করলেন কাহিনীকার- ‘‘যদি এই মুহূর্তে বড় কোন একটা হোটেলের সুইমিংপুলে যেতে পারতাম, চারপাশে থাকতো নগ্ন রমণীরা।’’ ব্যাস- চোখের পলকে কাহিনীকারের ইচ্ছে পূরণ হলো। এবার পাথর হাতে নিয়ে নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করলেন পরিচালক- ‘‘ইশ, যদি সময়ের সেরা নায়িকার সাথে মরিশাসের একটা দ্বীপে এখন সানবাথ নিতে পারতাম।’’ ব্যাস- হয়ে গেল। অদৃশ্য হয়ে গেলেন দু’জন। এবার পালা প্রযোজকের। যিনি এই দু’জনের পেছনে চলতি ছবিতে ইতোমধ্যে বিশাল অংকের টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছেন। প্রযোজক পাথর হাতে নিলেন। তার ইচ্ছেটা কী হতে পারে একটু ভাবুনতো! তিনি পাথর হাতে নিয়েই বললেন ‘‘একটু আগে এখান থেকে যে দুজন গিয়েছে, তারা আবার ফিরে আসুক।”
বিদেশী একটি জোক থেকে ঈষৎ অনুলিখন হলেও বিষয়টা ফেলনাও নয়। আমাদের প্রেক্ষাপটে প্রযোজকের অবস্থা এর চেয়েও শোচনীয়। শুনেছি এক সময়ের অনেক নামী প্রযোজক এখন পরিচালকদের থেকে পালিয়ে থাকেন। কারণটা খুব সোজা। বছর বছর কোটি টাকা প্রায় নিশ্চিত লোকসান দিয়ে কে-ই বা চাইবেন সিনেমা বানাতে! চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাম্প্রতিক একটা হিসাবের সামান্য কিছু অংশ এখানে তুলে দেয়া যেতে পারে। এখন গড়ে প্রতিটি চলচ্চিত্রের বাজেট থাকে ১ কোটি টাকা। যার মধ্যে বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই ফ্লপ করে। সমিতির গড় হিসাবমতে ফ্লপ ছবিগুলোর প্রযোজক প্রতিটি ছবিতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা পুঁজি হারান। প্রত্যেক বছর ২ থেকে ৩টি চলচ্চিত্র হিট হয় এবং শতকরা ৫ ভাগ প্রযোজক পুঁজি নিয়ে ঘরে ফিরতে পারেন।
খুব বেশি মেদবহুল তথ্য দিয়ে ভারি না করে দু’তিন বছরে লাভজনক ফিল্মের একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান এখানে আলোচনার সুবিধার্থে উল্লেখ করা যেতে পারে। ২০১২ সালে শাহীন সুমনের ‘‘খোদার পরে মা’’ চলচ্চিত্রটি দেড় কোটি টাকা মুনাফা করে। এ বছর বদিউল আলম খোকনের ‘‘বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না’’ মুনাফা করে ৯০ লাখ টাকা। এছাড়া অন্য কোন ছবি তেমন ব্যবসাসফল তো হয়-ই নি, উল্টো পুঁজি খুইয়েছেন প্রযোজকরা। ২০১৩ সালে শাহীন সুমনের ‘‘অন্যরকম ভালোবাসা’’ ৮৫ লাখ টাকা এবং বদিউল আলম খোকনের ‘‘মাই নেম ইজ খান’’ ৭০ লাখ টাকা মুনাফা করে। ২০১৪ সালে জাকির হোসেন রাজুর ‘‘পোড়ামন’’ ৬০ লাখ টাকা, ইফতেখার চৌধুরীর ‘‘অগ্নি’’ দেড় কোটি টাকা এবং অশোক পাতির ‘‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’’ ১ কোটি টাকা মুনাফা করে। তিন বছরের পরিসংখ্যানে সাতটি চলচিত্রকে আমরা ব্যবসাসফল হিসেবে পাই। প্রদর্শক সমিতির হিসাব মতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরে ৪০ থেকে ৪৫টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। অবশ্য এক দশক আগেও এ সংখ্যা ৯০ থেকে ১শ ছাড়াতো। সেটি ভিন্ন আলোচনার বিষয়। এখানে আমরা যেকোন একটা বছরকে বেছে নিতে পারি। ধরা যাক, ২০১৪ সালে ৫০টি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, তার মধ্যে ব্যবসাসফল হয়েছে মাত্র তিনটি ছবি। যার মধ্যে একটি আবার যৌথ প্রযোজনার। তাহলে বাকি ৪৭টি চলচ্চিত্রের প্রযোজকরা হয় কোনমতে পুঁজি তুলে এনেছেন, নয়তো লোকসান গুনেছেন।
অনেকে হয়তো বলবেন, কালো টাকার মালিকদের কাছে এ টাকা কিছুই না। কিন্তু আমার এতে দ্বিমত আছে। এখন অনেক নামী ও মেধাবী পরিচালক লগ্নির অভাবে ভালো ছবি বানাতে পারছেন না। কারণ প্রযোজকরা এই শিল্পখাত থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে লোকসান ঠেকাতে কেউ কেউ টালিউডের দিকে ঝুঁকছেন। বানাচ্ছেন যৌথ প্রযোজনার ছবি। যৌথ প্রযোজনার ছবিতে লোকসানের ঝুঁকিটা তাহলে কম কেন? এটা কি কেউ ভেবে দেখেছেন? আমাদের এখানকার শিল্পীদের চেয়ে টালিউডের অভিনেতা অভিনেত্রীর কদর দর্শকদের কাছে কি আসলেই বেশি? এটাও ভাববার বিষয়।
আমাদের ঢাকাই ছবির দুর্দশার কারণ হিসেবে অনেক কিছুই আলোচনা করা যেতে পারে। তার আগে সাম্প্রতিক কালের কয়েকটি ফিল্মের নাম উল্লেখ করি। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির তালিকায় পাওয়া কয়েকটি নাম- পরাণ যায় জ্বইলা, অ্যাকশন জেসমিন, নিস্পাপ মুন্না, রিক্সাওয়ালার প্রেম, মা বড় না বউ বড়, বাবা বড় না শ্বশুর বড়, বিয়ে হল বাসর হলো না, বলবো কথা বাসর ঘরে, ভালোবাসা দিবি কি না বল, প্রেম বড় না টাকা বড়, মন বসে না পড়ার টেবিলে, হিরো দ্যা সুপার স্টার, নষ্ট ছাত্র- ইত্যাদি। যে কোন সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডের টাইটেল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষনীয় দিক। ভেতরের উপাদান বিবেচনার আগে ছবির নাম এবং পোষ্টারের দিকে আগে দৃষ্টি দেন দর্শকরা। এখানে উল্লেখিত নামগুলোর সঙ্গে আমাদের মধ্যবিত্ত দর্শকদের শিল্পভাবনা ও রুচি কতটা যায় তা অবশ্যই বিবেচনার বিষয়।
বলা হয়ে থাকে পৃথিবী যেমন সূর্যের চারদিকে ঘোরে, বাংলা ছবির কাহিনীও তেমনি একই বলয়ের মধ্যে ঘূর্ণায়মান। কিছু ভিন্নধারার ছবির বাইরে যেকোন বাণিজ্যিক ছবির প্রথম পাঁচ মিনিট দেখেই নাকি এখানকার দর্শকরা বলে দিতে পারেন শেষে কী ঘটবে। তাই যদি হয়, কোন আকর্ষণ, কোন সাসপেন্সই যদি না থাকে তাহলে গাঁটের পয়সা আর মূল্যবান সময় নষ্ট করে কেন মানুষ সিনেমা হলে যাবেন! সংলাপেরও একই দশা। উদ্ভট, আজগুবি অনেক ভাষায় গাঁজাখোরি সংলাপে ভরপুর থাকলে সে চলচ্চিত্র দিয়ে দর্শক টানা আদৌ কি সম্ভব? সংগীত, চিত্রগ্রহণ, কস্টিউম, কাহিনী এমনটি মেকিং পর্যন্ত হয় পুরো নকল, না হয় তিন চারটি ভিনদেশী সিনেমা জুড়ে একটি খিচুড়ি। মৌলিক চলচ্চিত্র কোথায়? সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিশ্রুতিশীল পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল ‘সত্ত্বা’ বানিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ঠিক, কিন্তু তিনিও তো সেই কোলকাতার ঘাড়ে ভর করেছেন। তার নায়িকা পাওলি দাম। এদেশে আসলেই কি ভালো, গুণী, স্মার্ট, আধুনিক নায়িকার খুব অভাব? যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে কেন?
একটু পেছন দিক থেকে আসি। অনেকেই এই ইতিহাস জানেন। তারপরও আলোচনার খাতিরে পূনরাবৃত্তি করতে হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে সিনেমা প্রদর্শনের সূচনা হয়েছিল মুম্বাই থেকে। ৭ জুলাই ১৮৯৬ মুম্বাইয়ের ওয়াটসন হোটেলে প্রথম চলচ্চিত্র (বায়স্কোপ) প্রদর্শিত হয়। ভালো কথা। মুম্বাই সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখেনি, এখন হলিউড ফিল্মের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুনিয়াজোড়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে। এবার আসি কোলকাতার দিকে। জন স্টিভেনস, হার্ডসন এবং ফাদার লাফাউনের হাত ধরে মুম্বাইয়ের কিছু সময় পরেই কোলকাতার সেইন্ট জেভিয়ার্স কলেজে বায়স্কোপ প্রদর্শিত হয়।
তাহলে আমরা কি খুব পিছিয়ে ছিলাম? মোটেও না। সুনির্দিষ্ট সূত্র না থাকলেও বলা হয়ে থাকে ওই একই সময় স্টিভেন্স এর হাত ধরে ঢাকাতেও বায়স্কোপ প্রদর্শিত হয়। তবে বাংলা সাপ্তাহিক ঢাকা প্রকাশ এর তথ্যমতে, ১৮৯৮ সালে পাটুয়াটুলীর ক্রাউন থিয়েটারে সর্বপ্রথম বায়স্কোপ প্রদর্শিত হয়। কোলকাতা কেন্দ্রিক বায়স্কোপ কোম্পানি বেডফোর্ড এই শো এর আয়োজন করে। আরেকটা মজার তথ্য, ১৮৯৮ সালেই ভোলায় হীরালাল সেনের রয়েল বায়স্কোপ কোম্পানি পৃথক একটা শো এর আয়োজন করে। এর দু’বছর পর জয়দেবপুরের জমিদার বাড়িতে আলাদা একটি শো দেখায় হীরালাল সেনের কোম্পানি। তার মানে ভারতীয় উপমহাদেশে সিনেমা প্রদর্শনের ইতিহাসে আমাদের গৌরবও কম নয়। ঢাকার নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ইতিহাসও গৌরবের। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল ১৯১৩-১৪ সাল থেকেই ঢাকার আরমানিটোলায় পিকচার হাউসে নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হতে থাকে। পরে অবশ্য নাম বদলে নিউ পিকচার হাউস এবং শাবিস্তান হয়।
রয়েল বায়স্কোপ কোম্পানি প্রথম বাঙালি প্রদর্শন প্রতিষ্ঠান যার প্রতিষ্ঠাও কিন্তু এই মাটিতেই। ১৮৯৮ সালে মানিকগঞ্জের বাগজুরি গ্রাম থেকেই এই প্রদর্শন প্রতিষ্ঠানের জন্ম। অবশ্য হীরালাল সেন প্রথম বাঙালি পরিচালক এবং প্রযোজকও। তিনি ১৯০০-১৯০১ সালেই মানিকগঞ্জ এবং কোলকাতায় কিছু চলমান চিত্র ধারণ করেন। তার মানে চলচিত্র প্রদর্শন, পরিচালনা এবং প্রযোজনার সব ক্ষেত্রে আমাদের ইতিহাস বেশ গৌরবের। তাহলে এখনকার এই দুরাবস্থা কেন? একটা ছোট্ট তথ্য থেকেই বাংলাদেশের চলচিত্রাঙ্গনের দুরাবস্থা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গে সিনেমা হল ছিল ৮০ টি। আর চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির তথ্যমতে, ৮০ এর দশকে সিনেমা হল ছিল ১ হাজার ২০০। এখন আছে ৩শ ৪০ টি। যার মধ্যে দেড়শ থেকে দু’শো সিনেমা হল বন্ধ হবার পথে।
মুখ ও মুখোশ থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত তো ভালোই চলছিল। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে বেশি মুনাফার লোভে বিদেশী মুভি ও দৃশ্যের নকল, বিদেশী মিউজিকের নকল, অশ্লীলতা এবং কাটপিসের তালে বাংলা চলচিত্র তার সুদিন হারিয়েছে। সে সময়ের কোন মুভিই নাকি পরিবারসহ হলে গিয়ে দেখার মত ছিল না! বাংলা চলচিত্রের ভোক্তা কারা? মধ্যবিত্ত বাঙালি। যারা অবসরের বিনোদন হিসেবে সিনেমা হলে গিয়ে পরিবারসহ কমার্শিয়াল মুভি দেখে বিনোদিত হত, হাসতো, কাঁদতো এবং রুপালী পর্দার মানুষগুলোর ভক্ত অনুরক্ত হয়ে তাদের অনুসরণ করতো। আপনি নিজে একবার ভাবুনতো শেষ কবে পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে বাংলা সিনেমা দেখেছেন? আমার ধারণা বছরটা ভেবে বলতে হবে। কারণ এখন যেসব বাণিজ্যিক ছবি হয়, তার বেশিরভাগই আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের মূল্যবোধ ও আমাদের জীবনাচারের প্রতিনিধিত্ব করে না। এ কারণেই খানিকটা ব্যতিক্রমী হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়গুলোতে বাণিজ্যিক ছবির চেয়ে কিছু আর্ট ও সামাজিক ফিল্ম ভালো রেসপন্স পেয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে মনপুরা, টেলিভিশন ও সর্বশেষ আয়নাবাজির কথা বলতে পারি।
বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকার ফিল্মপাড়া উত্তাল। এ ওকে দুষছেন, সে তাকে দুষছেন। চলছে বহিস্কার, বর্জন, গালাগালি, অবাঞ্ছিত ঘোষণার খেলা। যৌথ প্রযোজনার ছবিকে বাংলা ফিল্মের দুরাবস্থার জন্য দুষছে সমিতিগুলো। বছর বছর নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মেরে এখন নাচতে না জানলে উঠান বাঁকার মতো অজুহাত দাঁড় করালে তো চলবে না। অজুহাত সামনে দাঁড় না করিয়ে নিজেদেরই একবার আয়নার সামনে দাঁড় করান। আত্মসমালোচনা করুন। সমিতিগুলো গালাগালি, হাতাহাতি না করে সবাই মিলে বসুন। নিজেদের বেহাল দশার কারণ খুঁজে বের করুন। নতুন নতুন মৌলিক কাহিনী আনুন, দুর্বার সংলাপ রচনা করুন, সংগীত পরিচালকরা হৃদয় দিয়ে সংগীত সৃষ্টি করুন, কস্টিউম ডিজাইনাররা এদেশের জীবনাচারের সঙ্গে মিলিয়ে কস্টিউম বিবেচনা করুন, নৃত্য পরিচালকরা ইম্প্রোভাইজেশন আনুন, চিত্রগ্রাহকরা দিন নিজের সেরাটা। বানান এমন একটা মুভি, মানুষ অবশ্যই দেখবে। চিরাচরিত একটু প্রেম, একটু মারপিট, একটু দুঃখবোধ, একটু ক্লাইমেক্সের পর- ‘অতঃপর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল’ ধরনের মুভির বাইরে নতুন কিছু ভাবুন। নতুন নতুন অনেক ঘটনা, অনেক চরিত্র অনেক জীবনবোধ ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনাদের আশপাশেই- দৃষ্টি এফডিসির ঘুপচি ক্লাব থেকে বের করে এনে উদার আকাশ দেখুন। আমার বিশ্বাস আপনারা পারবেন। কারণ বহু মেধাবী চলচ্চিত্রকার আছেন, কাহিনীকার আছেন- তাদের নিজেদের মতো করে ভাববার ও কাজ করার সুযোগ দিন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম নিয়ে অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ গ্রাজুয়েশন করছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র ইনষ্টিটিউট এবং আরো কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকে ডিপ্লোমা করছেন- নিজেরা যক্ষের ধনের মত আঁকড়ে না রেখে তাদেরও সুযোগ দিন। তাদের সাথে মিলিয়ে দিন নিজেদের অর্জিত অভিজ্ঞতাগুলো।
শুধু একে অন্যকে দুষলে চলবে না। সবাই জানে দেশের হল বুকিং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কী হয়। কারা এদেশের চলচিত্রের বাজারটাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। কারা নিম্নমানের টেলিফিল্মকে মুভি হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিদেশী তথা ভারতীয় মুভি আমদানি ক্ষতিকারক না লাভজনক তাও প্রমাণের সুযোগ আছে। কাজের ভাগাভাগি নিয়ে নাকি মনোমালিন্য করছেন আপনারা। কাজ দিলে চুপ, না দিলে হইচই। এসব আচরণ তো কোন দায়িত্বশীল গোষ্ঠীর হতে পারে না। একটা ধুমধাড়াকা নতুন মাত্রার বিনোদনে ভরপুর বাণিজ্যিক ছবি তৈরি করুন না- দেখবেন প্রদর্শক সমিতিই বুকিংএর জন্য আপনার পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছে- দর্শকরাও লুফে নিচ্ছে দারুণভাবে। দোহাই আপনাদের, এভাবে নিজেদের অপকর্ম ও ব্যর্থতা ঢাকতে কাদা ছোঁড়াছুড়ি না করে মুমূর্ষ শিল্পটার মুখে অক্সিজেন দিন। আপনাদের সদিচ্ছা থাকলে সুদিন ফিরবেই- এ আমার গহীন বিশ্বাস।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)