‘এনাফ ইজ এনাফ’, শত্রু মোকাবেলার জন্য এখনই সময় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। লন্ডন ব্রিজ ও বরোহ্ মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
জনগণের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, বিগত তিন মাসে এটি তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলা।সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনা দেখে মনে হচ্ছে এসব হামলা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত নয়। সন্ত্রাসী হামলার নতুন নতুন ধরণ দেখছি আমরা। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলা তো সন্ত্রাসী হামলাই। তারা কখনো একে অন্যকে কপি করছে আবার কখনো সবচেয়ে হিংস্রভাবে আক্রমণ করছে।
সন্ত্রাসী হামলা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা আনছেন বলেও জানান তিনি। বলেন, আমাদের মূল্যবোধ বজায় রেখেই চলতে হবে কিন্তু যখন চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বিষয় আসবে তখন কিছু বিষয় পরিবর্তন করতে হবে। এসবকে আমরা তখনই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো যখন মানুষের মনকে আমরা সহিংসতা ছাড়িয়ে মূল্যবোধ বোঝাতে সক্ষম হবো।
এরপরে তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়া ও জনগণকে রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের দেশ বেশ উন্নতি করেছে। কিন্তু এখন বলার সময় এসেছে, যথেষ্ট হয়েছে। সবারই তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
এই ধরনের হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রচারণা বন্ধ রাখার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে আমাদের গণতন্ত্রের পথ রোধ করতে দেওয়া যাবে না। কাল থেকে আবার পুরোদমে প্রচারণা চলবে এবং নির্ধারিত দিনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামী চরমপন্থা প্রতিরোধে ৪ টি প্রস্তাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম বিষয়টা হচ্ছে এসব হামলা কোনো একটি নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত নয়, তারা একটি কমন ধারণার অনুসারী। এককভাবে ধ্বংসাত্বক ইসলামী চরমপন্থাকে লালন করে তারা। তারা বলতে চায় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশ্চাত্য ধ্যানধারণা ইসলামের ধ্যানধারণার পরিপন্থী। এই ধারণা প্রতিরোধ করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সেটা শুধু সামরিক শাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সম্ভব।
দ্বিতীয় প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব ধ্যানধারণা আরো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা জায়গা দিতে পারি না। আমাদের ইন্টারনেটে সাইবার স্পেস নিয়েও ভাবতে হবে যেখানে তারা চরমপন্থার পরিকল্পনা করে। সেই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে হবে যেখান থেকে এসব নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
তৃতীয়ত, শুধু অনলাইনেই নয় বাস্তব জীবনের এসব চরমপন্থীদের নিরাপদ স্থানগুলো ধ্বংস করতে হবে। সিরিয়া ও ইরাক আইএস ধ্বংসে আমরা মিলিটারি অ্যাকশন নিচ্ছি। দেশেও সেভাবেই অ্যাকশন নিতে হবে।
চতুর্থত, আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম স্ট্র্যাটেজি নিতে হবে। এখনকার আক্রমণগুলো আরো বেশি জটিল হয়ে উঠছে। হুমকিগুলোর ব্যাপারে আমাদের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে পুনরায় ভাবতে হবে।