আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী। এক শহীদের মা থেকে সব শহীদের মা হওয়ার সম্মান পাওয়া এই বীর নারীর জন্মদিনে তাকে সবাই নিজের মতো করে, নিজের ভাষায় শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জাহানারা ইমামের আন্দোলনের সাক্ষীরা আবার তাকে সম্মান জানাচ্ছেন সেই সময়কার স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে। এমনই একজন হলেন সাংবাদিক রূদ্রাক্ষ রহমান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্মৃতি হাতড়ে শহীদ জননীকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন:
‘কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে, যে জীবন আমি যাপন করছি তার মধ্যে শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় কোনটি? আমি দ্বিতীয় কোনও ভাবনা ছাড়াই বলবো, বাংলাদেশের দ্বিতীয় পর্বের মুক্তিযুদ্ধে সামিল হওয়া। আর সেই যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ রুমীর জননী জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধে সন্তান হারানো জাহানারা ইমাম কালক্রমে সকলের জননী হয়ে ওঠেন। একাত্তরের ঘাতক দালালদের বিচার ও মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধের দাবিতে তার ডাকে গঠন করা হয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। শুরু হয় নতুন পর্বের মুক্তিযুদ্ধ, নবধারার আন্দোলন। আর শুরু থেকে থেকে আমি এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরেছি বলে এক ধরনের গর্ব বোধ করি।
১৯৯১ সালের শেষ দিক। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যুগপৎ টিকে থাকা এবং ভালোলাগার জন্য সাংবাদিকতাও করি। ‘জাগো বাহে কুনঠে সবাই’ এই ডাক দিয়ে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় সেগুনবাগিচা থেকে। নাম ‘প্রিয় প্রজন্ম’। সম্পাদক ফজলুল বারী। এখনকার ডাকসাইটে সংবাদকর্মী জুলফিকার আলি মাণিক, জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল, নঈম তারিক, রোকন রহমান, বিপ্লব রহমান, প্রভাষ আমিন, আরও অনেকে দল বেধে কাজ করি আর রাতে ঘুমাই প্রিয় প্রজন্ম অফিসে। তখন সময়টাই এমন – লেখার স্বাধীনতা ছিলো অপার। কোনো কিছুতেই পরোয়া নেই আমাদের। প্রভাষ আমিন আর আমাকে অন্য পত্রিকার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে দল বেঁধে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘুরিয়ে আনা হলো। তিন পার্বত্য জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মানুষের জীবন দেখে ঢাকায় ফিরে লিখে দিলাম, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম: অ্যা ল্যান্ড অব প্যারেড অ্যান্ড ফ্যাশন’। যাদের সৌজন্যে আমাদের ওই ভ্রমণ, প্রতিবেদনটা তাদেরই বিপক্ষে গেলো। প্রথা মাফিক প্রতিবাদ এলো। তাতে আমার, আমাদের কিছুই আসে যায় না। আমরা নেমেছি নতুন কিছু করবো বলে।
মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের কোনো আপোষ নেই। স্বভাবতই ‘প্রিয়প্রজন্মে’ ধারাবাহিকভাবে ছাপা হতে থাকে বিভিন্ন জেলার যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের তালিকা। আমাদের প্রকাশ্য শত্রু জামায়াত-শিবির। শিবিরের নাম দেওয়া হয় ‘বাচ্চা রাজাকার’। আমাদের ভেতরের এই দ্রোহের আগুন দ্বিগুণ হয়ে ওঠে যখন বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ১৯৯১ সালে আমাদের বিজয়ের মাসে পাকিস্তানি নাগরিক, ঘাতক-দালাল যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামীর আমির করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষ তীব্র ঘৃণা আর নিন্দা জানাতে থাকে। সেই উত্তাল সময়ে একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা নতুন করে সংগঠিত হয়ে, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠন করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। তাতে করে সংক্ষুব্ধ মানুষ একটি প্লাটফর্ম খুঁজে পায়। প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক আর ছাত্র সংগঠন নির্মূল কমিটির আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়।
এক পর্যায়ে নির্মূল কমিটি ঘোষণা করা হয়, ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে গণআদালত বসিয়ে বিচার করা হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধানশত্রু-ঘাতক গোলাম আযমের। সেই ঘোষণার পর থেকে দেশের সব কিছু দ্রুত পাল্টে যেতে শুরু করে। অনেক প্রতিবেদনের সঙ্গে ‘প্রিয় প্রজন্ম’-এ একটি বিশেষ প্রতিবেদন করতাম আমি। শিরোনাম ছিলো – ‘গোলাম আযমের ফাঁসি হবে গণআদালতে’। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য, সঙ্গে সংবাদ নিয়ে প্রতিবেদনটি করা হতো। এক পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনের সঙ্গে শিল্পী উত্তম সেনের একটি কার্টুন থাকতো। নিচে গোলাম আযম আর ওপরে ঝুলছে ফাঁসির দড়ি। প্রতি সপ্তাহে ফাঁসির দড়ি একটু একটু করে নেমে আসছে।
২৬ মার্চের আগে যে ইস্যুটি বের হয় সেই কার্টুনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ওই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীকে। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আবদুর রাজ্জাক, জাসদ-এর প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ আহমেদ, বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিমানমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রয়াত আহমদ শরীফ, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা-বিচিত্রা সম্পাদক প্রয়াত শাহাদত চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মতামত নিয়েছি আমার প্রতিবেদনের জন্য। তখন সময়টাই এমন যে ‘প্রিয় প্রজন্মের’ সম্পাদক থেকে শুরু করে পুরো টিম নেমে পড়েছিলাম ওই আন্দোলনে।
তারপর জাহানারা ইমামের বর্তমানে এবং অবর্তমানে নানা বাঁক নিয়েছে নির্মূল কমিটির আন্দোলন। অনেক দুঃসময়, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে রজত জয়ন্তী পার করেছে এই মহান আন্দোলন।
১৯৯২ সালে দৈনিক বাংলা ভবনে শাহরিয়ার কবিরের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে সেই যে পরিচয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মূল কমিটির আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া তা আজও অবিচ্ছিন্ন। দৈনিক বাংলা ভবন থেকে মহাখালীর গ-১৬, পঁচিশ বছরে আমাদের জীবনে অনেক কিছু ঘটেছে। যারা শুরু করেছিলেন এই আন্দোলন, তাদের অনেকেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অনেকে ছেড়ে গিয়েছেন আন্দোলন। আবার সারা দেশে নতুন প্রজন্মের অনেকে সম্পৃক্ত হয়েছে এতে।
দুই
মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের একটা বিখ্যাত গল্প আছে ‘সময়ের প্রয়োজনে’ নামে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম থেকে শাহরিয়ার কবির, তার সঙ্গে আমরা, তারপর আরেক প্রজন্ম সেই সময়ের প্রয়োজনে, সময়ের দাবি পূরণে নির্মূল কমিটির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। নির্মূল কমিটির ভেতরে থেকেই একাত্তরের ঘাতক-যুদ্ধাপরাধীদের অপকর্মের তথ্য সংগ্রহ করতে ছুটে গেছি প্রত্যন্ত প্রান্তরে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের জন্য কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে যে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন গঠিত হয়, সেই কমিশনের হয়ে মাণিক, প্রভাষ, মিজানুর রহমান খান মন্টি, মেহেদী হাসান ছুটে গেছি চট্টগ্রাম, পাবনা, শেরপুর, পিরোজপুর, ফরিদপুরের অনেক জায়গায়।
তখন সেই জায়গাগুলো ছিল আমাদের জন্যে বিপদসংকুল, কারণ বিএনপির শাসনামল। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাত্তর সালের অপকর্মের তথ্য সংগ্রহ করা ছিলো রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ। আগেই বলেছি, তখন আমরা কোনও কিছুতেই কোনো কিছু মনে করতাম না। একাত্তরের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার শুরু হয়েছে। সেই আদালতের রায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে। ফাঁসির দড়িতে ঝুলেছে আরেক জামায়াত নেতা কামারুজ্জামান। জামায়াতের এই দুই নেতার অপকর্মের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের কাজে আমি নিয়োজিত ছিলাম। একা গিয়েছিলাম ফরিদপুরের চরভদ্রাশন আর সদরপুরে। কাজে নেমে বিএনপি-জামায়াতের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার একটু শঙ্কা থাকলেও পথে পথে সাধারণ মানুষের সহায়তা পেয়েছি অনেক।
কাদের মোল্লার সম্পর্কে তথ্যের জন্য পড়ন্ত বিকেলে আমি যখন চরভদ্রাশনে নামি তখন আর সেদিন ফরিদপুরে ফেরার বাস ছিল না। পদ্মা নদীর ওই চরে তখন পর্যন্ত রাত্রিযাপনের কোনও হোটেল- মোটেল হয়নি। কী করা যায়? ঢাকা থেকে রওয়ানা করার আগে একজনের ঠিকানা দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল। গিয়ে শুনি তিনি বদলি হয়ে গেছেন অন্য কোনও উপজেলায়। উপায়? চরভদ্রাশনে আওয়ামী লীগের সভাপতির খোঁজ করতেই একজন জানালেন গনজর আলী মোল্লা। তিনি একই সঙ্গে চরভদ্রাশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও।
চারদিকে তথ্য-তালাশ করে সন্ধ্যার পরে যখন ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে গিয়ে নিজের উদ্দেশ্য আর বিপদের কথা বলি, তখন তিনি ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। বিনীতভাবে জানান, তার বাড়িতে রাতের খাবারের পালা একটু আগেই শেষ হয়ে গেছে। দুটো রুটি আর মাংসের একটু ঝোল ছাড়া অবশিষ্ট কিছু নেই। অগত্যা তা দিয়েই রাতের খাবার সারতে হয় আমাকে। তারপর কাদের মোল্লা, চরভদ্রাশনের রাজনীতি, নিজের জীবনের অনেক কথা জানান গনজর আলী মোল্লা। জানা যায় অনেক ঝঞ্ঝা গায়ে মেখে আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঝান্ডা তিনি উড্ডীন রেখেছেন ওই চরে। এমপি নির্বাচনে প্রতিযোগিতা বা কেন্দ্রে বড় কোনও পদ পাওয়ার দৌড়ে কোনো দিন ছিলেন না তিনি। পরের সকালে চরভদ্রাশন থেকে যখন সদরপুর উপজেলার দিকে পা বাড়াই তখন গনজর আলী মোল্লা বলে দেন, এই এলাকায় জন্ম হলেও কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে মিলে মানুষ হত্যা করেছে ঢাকার মিরপুরে। তখন তার নাম হয়ে গিয়েছিলো ‘মিরপুরের কসাই’।
মাণিক আর আমি শেরপুরে যাই একাত্তরে কামারুজ্জামানের নির্যাতনের বিবরণ আনতে। শেরপুর বাজারের সাহাদের কাপড়ের দোকান, সিড়ি নদী সাক্ষী দেয় কতটা নৃশংস ছিলো কামারুজ্জামানের ভূমিকা। পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে মিলে কামারুজ্জামান পুরো শেরপুর জেলায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের ধরে এনে তাদের সিড়ি নদীর পাড়ে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হতো। প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানান, সিড়ি নদীর ঘোলা পানি তখন মানুষের রক্তে লাল হয়ে যেতো। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেয়। তার ফাঁসি কার্যকরে শেরপুরের সেই নির্যাতিত-ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে, আমার জন্য এ এক বড় পাওয়া।
জামায়াত নেতা, পরবর্তীকালে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামীর এলাকা পাবনার বেড়া-সাঁথিয়া উপজেলার গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছি আমি। নিজামী তখন কতটা ঠান্ডা মাথায় মুক্তিযোদ্ধা এবং এই যুদ্ধের পক্ষের মানুষদের খুন করেছেন তার বিবরণ দিতে গিয়ে এখনও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেকে। নিজামী এবং তার বাহিনীর নির্যাতনের এক জীবন্ত সাক্ষী শাহজাহান। তাকে ধরে নিয়ে গলা কেটে ফেলে দেওয়া হয় নদীতে। বেড়ার শালিখা গ্রামের শাহজাহান প্রাণে বেঁচে গেলেও স্বাভাবিক বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। সেই শাহজাহানের সাক্ষ্য গ্রহণ করি আমরা। মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি হয়েছে।
এমন অনেক ঘটনা জড়িয়ে আছে নির্মূল কমিটির আন্দোলনের সঙ্গে পথ চলতে গিয়ে। এখন, এক্ষণে নির্মূল কমিটির সঙ্গে হাঁটা পথের দিকে তাকাতেই অনেক ঘটনা ফিরে ফিরে আসছে। এতো সব ঘটনার ভিড়ে, কথার মধ্যে কেবল এটুকুই জোর দিয়ে বলতে পারি, আমি এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে যেমন সময়ের দাবি পূরণ করতে পেরেছি, তেমনি আমার ব্যক্তিগত অনেক দাবি পূরণ করেছে এই সংগঠন।
বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর কেউ কি নিশ্চিত হয়ে ভাবতেও পেরেছিলেন যে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গোলাম আযমকে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে? তার মৃত্যু হবে কারাগারেই? ফাঁসিতে ঝুলে মরতে হবে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, মীর কাশেম আর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো কুখ্যাত রাজাকার-যুদ্ধপরাধীদের? হয়েছে! এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে! মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশে এই কাজটি সম্ভব করার জন্য কৃতিত্বের দাবিদার যেমন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তেমনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
শহীদজননী জাহানারা ইমামকে কাছ থেকে দেখেছি। দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়তে নিজেকে কীভাবে তিনি সমর্পণ করেছিলেন।
এই মায়ের জন্ম দিনে তাকে সালাম!’