সার্ভার ত্রুটিতে দীর্ঘদিন স্থবির থাকার পর গত এক মাসে তাৎক্ষণিক অনলাইন ব্যাংকিং বা আরটিজিএসের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এই সময়ে লেনদেন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, সার্ভারে সমস্যার কারণে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আরটিজিএসে লেনদেন কমে যায়। এরপর লেনদেন বাড়াতে গত মাসে ব্যাংকগুলোকে নিয়ে বৈঠক করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে দীর্ঘদিন স্থবিরতার পর রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বা আরটিজিএসে লেনদেন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আরটিজিএস ব্যবস্থায় ৬২ হাজার ২৫৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর আগে আগস্টে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে বড় অংকের চেকের লেনদেন (আন্ত:ব্যাংক) সহজ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দ্রুত নিষ্পত্তি করতেই আরটিজিএস অর্থাৎ ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ২০১৫ সালের শেষদিকে এই ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মূলত তুলনামূলক কম খরচ ও তাৎক্ষণিক পরিশোধের সুযোগের ফলে অনলাইনে লেনদেন নিষ্পত্তির সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম এখন এই মাধ্যম। গ্রাহকরা অনলাইন ব্যাংকিংয়ে এক লাখ বা তার বেশি অংকের টাকা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে এ ব্যবস্থায় এক লাখ ১১ হাজার ৫৪৫টি লেনদেনের বিপরীতে মোট এক লাখ ৮৫ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ হয়। তবে লেনদেন ব্যাপক কমে মার্চে যা ছিল ১৫ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এর পরের মাস এপ্রিলে লেনদেন আরও কমে দাঁড়ায় ৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে সার্ভারে ত্রুটি পুরোপুরি ঠিক হলেও এক ধরনের উদ্বেগ থেকে বড় লেনদেন নিষ্পত্তিতে অন্য ব্যবস্থা ব্যবহার করছিল ব্যাংকগুলো।
আরটিজিএসে যেভাবে লেনদেন সম্পন্ন হয়
এই মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতে কোনো একটি ব্যাংকের গ্রাহক তার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগে জানাবে যে, তার অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি ব্যাংকের কোনো গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাঠাতে হবে। তখন ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগ ওই পেমেন্ট অর্ডার বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএসে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই সেই অ্যাকাউন্টে ওই পরিমাণ টাকা জমা হয়ে যায়।