চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এক ‘নৃশংস নির্যাতকের’ প্রতি ট্রাম্পের দৃঢ় সমর্থন

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান হিসেবে নিজের মনোনীত প্রার্থী জিনা হাসপেলের (৬১) পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে কঠোর প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ব্যাপক নিন্দিত হন জিনা। এমন সমালোচনার মধ্যেই সিআইএ প্রধান হওয়ার দৌড় থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেও নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

ঠিক এই সময়েই তার প্রতি এমন সমর্থন প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার কারণেই সমালোচনার শিকার হতে হচ্ছে জিনাকে।

১৩ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পদ হারান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তার স্থলাভিষিক্ত হন সিআইএ পরিচালক মাইক পম্পেও।

এরপরই সিআইএ’র উপ-পরিচালক জিনা হাসপেলকে পরিচালকের দায়িত্বের জন্য মনোনীত করেন ট্রাম্প।

বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সিআইএ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জিনা, তার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে বুধবার (৯ মে) সিনেট শুনানি হওয়ার কথা।  যেখানে তার অনুমোদন নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। অনেকের ধারণা সিনেট শুনানি তার জন্য সহজ হবে না।

সোমবার এক টুইট বার্তায় জিনা হাসপেলের পক্ষে জোড়ালো সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প লিখেন, এই বিপদজনক সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি তিনি, যাকে ডেমোক্রেটরা চায় না। কারণ তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনেক কঠোর।

৩৩ বছর ধরে সিআইএ’তে কাজ করছেন জিনা। এর দীর্ঘ সময়ের অধিকাংশই তিনি আন্ডারকভার ছিলেন।

নিয়োগ চূড়ান্তের শুনানিকে সামনে রেখে শুক্রবার হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা হাসপেলকে প্রস্তুত করাচ্ছিলেন।  ৯/১১ পরবর্তী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আটক ও নৃশংসভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সিআইএ’র নতুন কর্মসূচিতে হাসপেলের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান কমকর্তারা।

ওই কর্মসূচিতে যেসব পদ্ধতি ব্যবহার হয় তা বিশ্বজুড়ে সমালোচিত। সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা জানান, হাসপেলের কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়ার পর তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন।

এরপর ভার্জিনিয়ার ল্যাংলিতে সিআইএ’র সদর দফতরে ফিরে যান হাসপেল।  পরে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্সসহ হোয়াইট হাউসের কয়েকজন কর্মকর্তা ল্যাংলিতে যান।  কয়েক ঘণ্টা ধরে হাসপেলের সঙ্গে আলোচনা করেন তারা।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পরও মনোনয়ন ধরে রাখার ব্যাপারে হাসপেলের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।  তবে শনিবার হোয়াইট হাউস জানায়, জিনা হাসপেল মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না।

জিনা হাসপেল ২০০২ সালে থাইল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাকসাইট কারাগার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। ওই কারাগারে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন করা হতো।

তার কারাগারে সন্দেহভাজন দুইজন আল কায়েদা সদস্যকে ওয়াটার বোর্ডিংয়ের মতো ভয়ানক শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বুশ আমলে নির্যাতনের বিভিন্ন সরকারির নথির আলোকে ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় ‘টর্চার রিপোর্ট’ নামের বইটি।

জিনা হাসপেলকে সিআইএ’র পরিচালক হিসেবে মনোনীত করার পর বইটির লেখক ল্যারি সিয়েমস উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।

গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ঘটনা হলো তিনি (জিনা) এজেন্সিতে থাকতে পেরেছেন, এজেন্সিতে বেড়ে উঠেছেন আর এখন পরিচালক হতে চলেছেন, যা গভীর সমস্যার কারণ হতে পারে।

হাসপেল ১৯৮৫ সালে সিআইএ-তে যোগ দেন।  তিনি সিআইএ’র জাতীয় গুপ্ত সেবা বিভাগের উপ-পরিচালক ছাড়াও বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সিআইএ পরিচালকের মনোনয়ন পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে হাসপেল বলেন, এই সুযোগ দেওয়ায় আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞ।