চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এক টাকায় এক কাপ চা’র ক্ষুদে উদ্যোগে সাফল্য

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের সোবাহান ব্যাপারীর ছেলে রজব ব্যাপারী লালন। গ্রামের মোড়ে পাঁচশ টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাক্স কিনে শুরু করেন চায়ের দোকান। প্রতিকাপ চা ৫০ পয়সা। সাথে ৫০ পয়সায় মেলে এক খিলি পান। শুরুটা আজ থেকে প্রায় ২৪ বছর আগে।  প্রথম দুই বছর ৫০ পয়সা করেই চা-পান বিক্রি করেন তিনি। তারপর দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে কুলাতে না পেরে এক টাকা করেই বিক্রি করা শুরু করেন প্রতিকাপ চা। পানের মূল্যও এক টাকা। তার এই এক টাকার ব্যবসা চলছে এখনও। বাংলাদেশের আর কোথাও এক টাকায় মিলবে না চা অথবা পান। লালনের নাম ছড়িয়ে পড়েছে এলাকা থেকে সারাদেশে। যে গ্রামে লালনের দোকান সেই গ্রামের নাম হয়েছে ‘এক টাকার মোড়’। সারাদিনই ভিড় জমে থাকে দোকানে।

দিনে ১০০০ থেকে ১২০০ কাপ চা বিক্রি হয়। পাশাপাশি পানও বিক্রি হয় প্রায় হাজার খিলি।
এলাকাবাসী সাফা কারী মিয়া জানান, লালনের বাবার কিছুই ছিলো না। এই চায়ের দোকান দিয়েই সংগ্রাম করে টিকে আছে লালন।

এক টাকায় চা পাওয়া যায় এমনটা বিশ্বাস করতে না পেরে রাজশাহী থেকে আসা সুজন জানান, তার বন্ধুর কাছে শুনেছেন এক টাকায় চা পাওয়া যায়, কিন্তু বিশ্বাস করেননি। তাই বাজি ধরে দেখতে এসেছেন। এসে দেখেন ঘটনা সত্য। চায়ের স্বাদও ভালো।

এরই ভেতর অন্য এক বিরাট সাফল্যের বীজ বুনেছিলেন লালন। এক টাকা কাপ চা বিক্রি করেই স্ত্রীকে শিক্ষিত করছেন উচ্চশিক্ষায়। লালনের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার সীমা বিয়ের সময় উচ্চমাধ্যমিকে পড়তেন। স্বামীর সহযোগিতায় তিনি এনএস সরকারি কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শেষ করে এখন স্নাতকোত্তর পড়ছেন। চ্যানেল আই এর ভাগ্যলক্ষী অনুষ্ঠানের এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাকরির আবেদন জানান সুবর্ণা।

সুবর্ণা বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক কষ্ট করে আমার পড়াশোনার খরচ যুগিয়েছেন। শত অভাবেও তিনি তার এক টাকায় এককাপ চা বিক্রির সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেননি। আমার ইচ্ছা, পড়াশোনা শেষে প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে একটা চাকরি দেন।’

দেখুন ভিডিওতে: