‘যোগ দিলেই কোটিপতি’ -ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ‘বিগ সিক্স’খ্যাত ছয় ক্লাবকে এমনই প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের বিদ্রোহী তকমা পাওয়া ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’। দ্য টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, কেবল যোগ দিলেই দলগুলো পাবে ৩১০ মিলিয়ন পাউন্ড!
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটি, টটেনহ্যাম হটস্পার ও আর্সেনালকে বলা হয় প্রিমিয়ার লিগের বিগ সিক্স। এই ছয় দলকে সুপার লিগের ‘ফাউন্ডার মেম্বার’ বা প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য হিসেবে বিবেচনা করছে সুপার লিগ কমিটি।
সঙ্গে লা লিগা, জার্মান বুন্দেসলিগা, সিরি আ ও লিগ ওয়ানের আরও নয়টি দলকে এক করে মোট ১৫ ক্লাবকে দেয়া হবে প্রতিষ্ঠাকালীন দলের মর্যাদা। আরও যোগ হবে পাঁচটি দল যারা প্লে-অফ খেলে পাবে টুর্নামেন্টের টিকেট। সবমিলিয়ে দল হবে ২০টি।
এই ২০ দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করে খেলানো হবে প্রথম রাউন্ড। কোয়ার্টার ও সেমিফাইনাল হবে দুই লেগের। পরে ফাইনাল হবে নিরপেক্ষ একটি ভেন্যুতে।
প্রথম ১৫ দলের জন্য ৩.১ বিলিয়ন পাউন্ড ফান্ড তৈরি করেছে সুপার লিগ কমিটি। মর্যাদা অনুযায়ী এ দলগুলো পাবে ৮৯ থেকে ৩১০ মিলিয়ন পাউন্ড ফান্ড। যে অর্থ দিয়ে নিজেদের স্টেডিয়াম-অনুশীলন গ্রাউন্ডের উন্নয়ন ও করোনাকালীন ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবে ক্লাবগুলো।
লিভারপুল, এসি মিলান, ম্যানইউ ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো দল এরইমধ্যে সুপার লিগে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ মৌখিকভাবে সম্মতি জানিয়েছেন। আরেক স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউ পদত্যাগ করার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়ে যান, যা নিয়ে তৈরি হয় আলোচনা-সমালোচনা।
মূলত টেলিভিশন স্বত্বের উপর ভিত্তি করে টুর্নামেন্টের আয় তুলে আনবে সুপার লিগ। তবে কিছু ম্যাচে আলাদাভাবে স্বত্ব পাবে ক্লাবগুলো, যে ম্যাচগুলো চাইলে তারা অন্য স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি করতে পারবে।
ফুটবলের বৈশ্বিক অভিভাবক সংস্থা ফিফা ও ছয় মহাদেশের কনফেডারেশনগুলো অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, কোনোভাবেই ইউরোপিয়ান সুপার লিগকে মেনে নেয়া হবে না। যেসব ক্লাব ও খেলোয়াড়রা এ টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন, তাদের বিশ্বকাপসহ অন্য টুর্নামেন্টগুলোতে নিষিদ্ধ করা হবে। বুধবার বিবৃতিতে এমনই জানিয়ে দিয়েছে ফিফা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিফা ও ছয় কনফেডারেশন পরিষ্কারভাবে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে বলতে চায়, এ ধরনের কোনো প্রতিযোগিতার সঙ্গে ফিফা ও অন্য কনফেডারেশনগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।’
‘যেসব ক্লাব ও তার খেলোয়াড়রা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে, তাদের ফিফা কিংবা অন্য কনফেডারেশন আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না।’
২০২৪ সাল থেকে নতুন এ প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার কথা। সেবছরই ইউরোপা কনফারেন্স লিগ নামে আরেকটি নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা।