চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

উদঘাটন হয়নি রহস্য

কক্সবাজারের উখিয়ায় একই পরিবারের নারী-শিশুসহ চারজনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় থমকে আছে পুরো এলাকা। ঘটনার একদিন পরও উদঘাটন হয়নি হত্যা রহস্য।

এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে তারা।

অন্যদিকে নিহতদের অন্তেষ্টিক্রিয়া শেষ হয়েছে। তবে বাড়ি ফিরে এখনও বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন প্রবাসী রোকেন বড়ুয়া।

জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ বড়ুয়ার কুয়েত প্রবাসী ছেলে রোকেন বড়ুয়ার মা সুখী বালা বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৬), ছেলে রবিন বড়ুয়া (৫), ও ভাই শিশু বড়ুয়ার মেয়ে সনি বড়ুয়াকে (৬) বুধবার রাতের যেকোনো সময় বাড়িতে প্রবেশ করে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এই ঘটনার পর এখনো পুরো এলাকা জুড়ে শোকের মাতম চলছে। পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা শোকে স্তব্ধ হয়ে আছে।

রত্নাপালং গ্রামের বাসিন্দা সমিরন বড়ুয়া বলেন: আমাদের গ্রামটি খুব শান্তিপ্রিয়। এখানেই এত বড় ঘটনা আমাদেরকে হতবাক করে দিয়েছে।

এই গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী পলাশ করবো বলেন: এরকম ঘটনা আমরা কোনদিন আশা করিনি। তাই আজ শুক্রবার আমাদের গ্রামের অনেক বাড়িতে রান্না হয়নি। গ্রামবাসী শোকাহত।

কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়া বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পৌঁছান। শুক্রবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মা, স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আর বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রোকেন বড়ুয়ার উপস্থিতিতে উখিয়ার কোটবাজার মহাশ্মশানে নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এর আগে পূর্ব রত্না আনন্দ বিহারে নিহতদের উদ্দেশে সংঘদান ও প্রদান অনুষ্ঠিত হয়। এসময়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অন্য ধর্মের হাজার হাজার মানুষ তাদের এক নজর দেখতে ভিড় জমায়।

এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেখতে আসা স্কুল ছাত্র রহিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ও আবুল কাশেম জানায়: এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আমাদের মন ভেঙ্গে গেছে। তারা বড়ুয়া সম্প্রদায় হলেও আমাদের সাথে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাই আমরা তাদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি। আমরা চাই দোষীদের খুঁজে বের করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

তদন্তকারী সংস্থা পিটিআই এর সাথে কথা বলেছেন রোকেন বড়ুয়া। রোকেন বড়ুয়া জানান: কিছু আত্মীয় স্বজনের ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে। বিষয়টি আমি পুলিশকে জানিয়েছি।

শুক্রবার রাতে নিহত মিলা বড়ুয়ার বাবা শশাঙ্ক বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল মনসুর জানিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কেউ আটক হয়নি বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন জানিয়েছেন: হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো ক্লু পাওয়া না গেলেও তাদের ইন্টারনাল কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে। পারিবারিক এবং আর্থিক বিষয় ও থাকতে পারে। পরিবারের সদস্য এবং সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অতি শীঘ্রই অপরাধীকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।