উহানে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট লেখার কারণে ‘সিটিজেন জার্নালিস্ট’ ঝাং ঝান-কে চার বছরের জেল দিয়েছে চীন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি বিরোধ ও সমস্যা উস্কে দিচ্ছিলেন। ঝাং ঝান ৩৭ বছর বয়সী সাবেক একজন আইনজীবী। মে মাসে তাকে আটক করা হয়। তারপর এর প্রতিবাদে তিনি কয়েক মাস অনশন করেন।
তার আইনজীবী বলেছেন, ঝাং ঝান এর স্বাস্থ্য নাজুক অবস্থায় এখন। উহানে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে সমস্যায় পড়েছেন চীনের সাতজন এমন সাংবাদিক। তার মধ্যে ঝাং অন্যতম।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে কোনো মিডিয়াই স্বাধীন নয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারি প্রচেষ্টার সমালোচনা করে বা সরকারের মর্যাদা খর্ব হয় এমন কোনো রিপোর্ট দেখলে সংশ্লিষ্টদের কড়া হাতে দমন করে চীন। সোমবার নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে সাংহাই কোর্টে হাজির করা হয় ঝাংকে।
গত ফেব্রুয়ারিতে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করতে উহান সফরে যান ঝাং। সেখান থেকে তিনি যেসব রিপোর্ট করেছেন তা ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হয়েছে। এর ফলে চীন কর্তৃপক্ষের বাঁকা চোখে পড়ে যান তিনি।
নেটওয়ার্ক অব চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারর্স (সিএইচআরডি) নামের এনজিও বলেছে, নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের আটক রাখার বিষয়েও তিনি রিপোর্ট করেছিলেন। এছাড়া ভিকটিম পরিবারগুলো যে হয়রান হচ্ছে, তা নিয়েও তিনি রিপোর্ট করেছিলেন।
এরপরই ১৪ মে উহান থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। এর একদিন পরে পুলিশ তাকে উহান থেকে ৪০০ মাইলেরও বেশি দূরে সাংহাইয়ে আটক দেখায়। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জ গঠন হয় নভেম্বরের শুরুর দিকে। এতে অভিযোগ করা হয় যে, তিনি টেক্সট মেসেজ, ভিডিও ও অন্যান্য বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাট, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো প্লাটফর্মে। এ ছাড়া তিনি বিদেশি মিডিয়ার কাছে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। এসবের মাধ্যমে উহানে করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন। এজন্য তার চার থেকে ৫ বছরের জেল সুপারিশ করা হয়।
অন্যদিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঝাং অনশন শুরু করেন। এতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তার এক আইনজীবী বলেছেন, তিনি ডিসেম্বরের প্রথম দিকে মিস ঝাংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সময় ঝাং তাকে বলেছেন, তাকে জোর করে টিউবের মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছে। ঝাং মাথাব্যথা, মাথাঘোরা এবং পেটের পীড়ায় ভুগছেন। তার এখন বাথরুমে যেতে হলেও অন্যের সহয়তা প্রয়োজন।
তার আইনজীবী বলেছেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ঝাং। তার কাছে প্রতিটি দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তার স্বাস্থ্যগত কারণে বিচার স্থগিত রাখার জন্য আবেদন করেছিলেন তারা।