ঘূর্ণিঝড় আম্পান গতকাল রাতভর দেশের উপকূলীয় এলাকায় তাণ্ডব চালানোর পর এখন দুর্বল হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আরও উত্তর–পূর্ব দিকে সরে গেছে। এটি এখন রাজশাহী-পাবনা অঞ্চলে নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে।
আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলাসহ উপকূলীয় এলাকায় অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এসব স্থানে আম্পানের আঘাতে একাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পটুয়াখালীসহ অন্যান্য স্থানে এখনও সাগর উত্তাল রয়েছে।
সাতক্ষীরা
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরা শ্যামনগরের উপকূলীয় অঞ্চল, আশাশুনি ও সাতক্ষীরা সদরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কাঁচা ঘর বাড়ি। মৎস্যঘের ও ফসলি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আশাশুনির ৬টি পয়েন্ট ও শ্যামনগরের একটি পয়েন্টে বেঁড়িবাধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আম্পানের আঘাতে শহরের কামালনগর এলাকায় গাছ পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের অগ্রভাগ বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা সুন্দরবনে আঘাত হানা শুরু করে। রাত ৯ টায় যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কেন্দ্র সাতক্ষীরার খুব নিকট দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করেছে। সাতক্ষীরা শহরে রাত ৯টায় ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়।
নোয়াখালী
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে নোয়াখালীর হাতিয়ায় সুখচর ও নলচিড়ার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে তিনটি গ্রাম প্লাবিত। হাতিয়া উপজেলার পঁচিশ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। সেখানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সেখানকার বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে।