পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে বিশেষ ফ্লাইটে করে তিনি লাহোর থেকে রওনা দেন।
নওয়াজ শরীফের ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দোহা হয়ে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সটিতে সম্পূর্ণ চিকিৎসা টিমসহ একটি নিবীড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং একটি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে।
দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকা পাকিস্তানের এই তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত জটিলতা রয়েছে।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর নওয়াজ শরীফের চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তাকে যাওয়ার অনুমতি দিলেও বিমানবন্দরের ‘নো ফ্লাই’ তালিকা থেকে তার নাম তখনো না সরানোর ফলে তিনি যেতে পারেননি।
অবশেষে শনিবার লাহোর হাইকোর্ট নওয়াজের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে সোমবার সরকার এ সিদ্ধান্তটিতে কাগজপত্রে অনুমোদন দেয়।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার নওয়াজ শরীফকে এত সহজ উপায়ে ছাড়তে চায়নি। সরকারের দাবি ছিল, বিদেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই তাকে ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের একটি ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) বন্ডে সই করে যেতে হবে।
কিন্তু আদালত শনিবার সেই বন্ডে সই করা ছাড়াই তাকে দেশত্যাগের অনুমতি দিয়ে দেন।
৬৯ বছর বয়সী নওয়াজ শরীফের স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার জন্য তার দেশত্যাগে ব্যর্থতার খবর গত প্রায় মাসখানেক ধরে পাকিস্তান, এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর অন্যতম আলোচিত ইস্যু।
বিবিসি জানায়, গত মাসে তার রক্তে শ্বেতকণিকা বা প্লেটলেটের পরিমাণ ১৬ হাজারে নেমে এসেছিল, যেখানে একজন সুস্থ মানুষের রক্তে এর সংখ্যাটি হয় প্রায় দেড় লাখ। ফলে তার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।
এছাড়াও নওয়াজ শরীফের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং কিডনির সমস্যা রয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় নিয়োজিত সরকারি এবং বেসরকারি মেডিক্যাল বোর্ড সবগুলোই বলছিল, উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার, কেননা পাকিস্তানে এসব উন্নত চিকিৎসার যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই।