কুড়িগ্রামে আবারো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে করে কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ঘর-বাড়ি দ্বিতীয় দফায় নতুন করে তলিয়ে গেছে। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দী থাকায় এসব এলাকার বন্যা কবলিত মানুষজনের দুর্ভোগ বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট।
ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত রোগ। চারণ ভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট আরো প্রকট আকার ধারন করেছে। এ অবস্থায় উঁচু সড়ক, বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া মানুষজন ঘর-বাড়িতে ফিরে যেতে পারছে না।
এ পর্যন্ত বন্যায় ১৩ শিশুসহ ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার বন্যা কবলিত প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষের জন্য এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে সামান্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা বেশির ভাগ বানভাসী মানুষের ভাগ্যে জুটছে না।
এদিকে জামালপরে যমুনার পানি আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কিছু সড়কে স্বাভাবিক যোগাযোগ শুরু করলেও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের প্রাথমিক তথ্যমতে সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৪ শত ২০ কোটি টাকা, ফসলী জমি ২৫ হাজার ৯ শত হেক্টর এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার গবাদি পশু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ১২৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। ইটভাটা, ব্রীজ, কালভাটসহ ভেঙ্গে পড়েছে অনেক সড়ক ব্যবস্থাও।
গাইবান্ধায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি পুনরায় বেড়েছে। আজ সকালে ব্রহ্মপুত্রের বিপৎসীমার ৫৩ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ইতোপূর্বে বন্যা কবলিত যে সমস্ত এলাকা থেকে পানি নেমে গিয়েছিল সে সমস্ত এলাকা আবার প্লাবিত হয়েছে । দ্বিতীয় দফায় বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।