চট্টগ্রাম থেকে: খানিক সময়ের ব্যবধানে ফিফটি তুলে নিলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। একে অন্যকে অভিবাদন জানালেন কব্জির টোকায়। গ্যালারি থেকে ভেসে এলো করতালি আওয়াজ। যেখানে শুধু মিশে আছে সুখকর অনুভূতির অনুরণন।
তৃতীয় দিনটা দারুণভাবে শেষ করা বাংলাদেশ প্রবেশ করছে আসল চ্যালেঞ্জের অন্দরমহলে। চালকের আসনে থেকেও ম্যাচ হারের অভিজ্ঞতা দলটির বেশি হওয়ায় বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলও থাকছে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছিলেন ৫ দিন ভালো খেলার লক্ষ্যের কথা। টেস্ট জেতার ফর্মুলা যে এটিই।
শুরুর সাফল্যের রেণু শেষের ব্যর্থতায় মিইয়ে যাওয়ার সাক্ষী চট্টগ্রামের এই ভেন্যুটিই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মেয়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরি যেমন বাংলাদেশকে দিয়েছিল টেস্টে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হতাশার মালা। শুরুতে আনন্দের সাগরে ভেসে দুঃখের অতলে ডোবার অভিজ্ঞতা কম হয়নি এদেশের ক্রিকেটভক্তদের।
সাগরিকার শেষ বিকেলে মুশফিক-লিটন এগিয়েছেন সমানতালে। বড় হয়েছে দলীয় সংগ্রহ। নিরাপদ জায়গায় বাংলাদেশকে পৌঁছে দিলেও দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়নি।
চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান। এ অবস্থা থেকে বড় লিডের আশা করা যেতেই পারে। ৭ উইকেট হাতে রেখে ৭৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
মুশফিক ৫৩ ও লিটন ৫৪ রানে থেকেছেন অপরাজিত। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে এসেছে ৯৮ রান।
১৩৩ রান করা তামিম ইকবাল চোটের কারণে বিশ্রামে যাওয়ায় আচমকাই ক্রিজে আসতে হয় লিটনকে। জুটি বাধেন মুশফিকের সঙ্গে। দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তারা অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে।
মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম ওপেনিং জুটিতে ১৬২ রান যোগ করলেও দুইশর আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। দেড়শ পেরিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ২২ রানের ব্যবধানে আরও দুটি উইকেট হারালে স্কোর দাঁড়ায় ১৮৪/৩।
তাতে খানিকটা চাপেই পড়েছিল দল। এরমাঝেই তামিম চা-বিরতির পর ব্যাটিংয়ে নামতে না পারায় নতুন করে শুরু করতে হয় বাংলাদেশকে। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে লঙ্কানদের সাদামাটা বোলিংয়ের সামনে সাধারণ ডেলিভারিতে উইকেট বিলিয়ে আসেন মাহমুদুল হাসান জয় (৫৮), নাজমুল হোসেন শান্ত (১), মুমিনুল হক (২)। আউটের ধরণে অসতর্ক শারীরিক ভাষার প্রকাশই মূর্ত হয়েছে।
২৫ মাস অপেক্ষার পর ঘরের মাটিতে টেস্টে জয়ের আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ। পেছনের ভুলের দিকে তাকিয়ে সামনে সতর্ক হলেই টেস্টের শেষদিনে শুধু নাঈম-সাকিব-তামিম-মুশফিকরা নন পুরো বাংলাদেশ দলটাই পেতে পারে হৃদয় নিংড়ানো অভিবাদন।