চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী আজ

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী আজ। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বাঙালি সমাজে প্রগতিশীল সংস্কারে বিদ্যাসাগরের অবদান কোনোদিনও ভোলার নয়। একদিকে যেমন আধুনিক বাংলা ভাষার রূপকার, তেমনি বাল্যবিবাহ রোধ ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় রেখেছেন অবিস্মরণীয় ভূমিকা। 

তবে বাঙালির কাছে বিদ্যাসাগর নামেই বেশি পরিচিত। লেখক, সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম ১৮২০ সালে অবিভক্ত ভারতের মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে। পাঁচ বছর বয়সে পাঠশালায় বিদ্যাসাগরের পড়াশোনা শুরু। আট বছর বয়সে বাবার সঙ্গে হেঁটে কলকাতা যান এবং সংস্কৃত কলেজে ১২ বছর অধ্যয়ন করেন। ব্যাকরণ, কাব্য, অলঙ্কার, বেদান্ত ও জ্যোতিষশাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তখন থেকেই ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি তার সঙ্গী।

পড়ালেখা শেষে সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করেছিলেন। বাংলা ভাষাকে যুক্তিগ্রাহ্য ও সকলের বোধগম্য করে তুলেছিলেন। বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার। তিনি জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ এবং সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই বাংলায় অনুবাদ করেছেন।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে, ‘বর্ণপরিচয়’, ‘সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা’ ও ‘ব্যাকরণ কৌমুদী’। অনুবাদ সাহিত্যের মধ্যে আছে, ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’, ‘শকুন্তলা’, ‘সীতার বনবাস’ ও ‘ভ্রান্তিবিলাস’।

বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ রোধ, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা, নারী শিক্ষা ইত্যাদি কাজে বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার একক সংগ্রামের ফলেই ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষে বিধবা বিবাহ আইন প্রবর্তন করে। বাংলায় নারীশিক্ষার প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

১৮৯১ সালের ২৯শে জুলাই বিদ্যাসাগর কলকাতায় প্রয়াত হন। বাংলার সমাজ-সংস্কৃতি-শিক্ষার ইতিহাসে চিরকালের এক উজ্জ্বল নাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আজও বাঙালি সমাজে তিনি অব্যাহতভাবে প্রাসঙ্গিক।