ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি, আর এই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমরা পরিবারের সবাই একসাথে হবার জন্য ছুটে চলি গ্রামের পথে। কেউ ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা, কেউ বা কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড় এভাবেই বিভিন্ন জন বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে ছোটে।
কেউ বাসে, কেউ ট্রেনে, কেউবা লঞ্চে, কেউ দীর্ঘক্ষণ বসে, কেউবা দাঁড়িয়ে, আবার কেউবা বাস কিংবা ট্রেনের ছাদে চড়ে পাড়ি দেয় দূরের পথ। কিন্তু কেউই ভাবে না এই দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা ছাদে বসে ভ্রমণের কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন তিনি। বিশেষ করে যারা বয়স্ক তারা এমনিতেই বিভিন্ন রকম হাড়ের ক্ষয়জনিত ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথা, হাঁটু ব্যথায় ভুগছেন তার উপর এই লম্বা জার্নি বা ভ্রমণ ঈদের আনন্দ মলিন করে দিতে পারে একেবারে।
তাই কিছু নিয়মাবলি মেনে চললে পাশাপাশি কিছু ব্যায়াম ও অর্থোটিকস বা প্রস্থোটিকস, যেমন – লাম্বার করসেট, সারভাইকাল, কলার নি-ক্যাপ, ইত্যাদি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী ব্যবহার করলে আপনার ভ্রমণ হতে পারে স্বাস্থ্যসম্মত ও ব্যথামুক্ত। সেজন্য মেনে চলুন কিছু নিয়ম নীতি
১. দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না মাঝে বিশ্রাম নিয়ে নিন। দীর্ঘসময় ধরে ট্রেন বা গাড়িতে বসে থাকলে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যথা আরোও বেড়ে যায়। এজন্য দীর্ঘ যাত্রা পথে ১-২ ঘন্টা পর থেমে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা করুন। ট্রেন-বাস থেকে নেমেই লাগেজ নিয়ে টানাটানি না করে কিছু সময় কোমরের মাংসপেশিকে রেস্ট দিন। এতে করে আপনার কোমর ভালো থাকবে।
২. যারা এমনিতেই বিভিন্ন রকম হাঁড়ের ক্ষয়জনিত ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথা, হাঁটু ব্যথায় ভুগছেন, তারা সব সময় চেষ্টা করবেন বাসের সামনের দিকের সিটে বসতে কারণ বাসের পিছনের সিটগুলোতে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে আর ঝাঁকুনিতে ব্যথা আরোও বেড়ে যায়।
৩. যারা কোমর ব্যাথায় ভুগছেন তারা ভ্রমণের সময় লাম্বার করসেট ব্যবহার করবেন যাতে ঝাঁকুনিতে ব্যথা বেড়ে না যায়।
৪.যারা ঘাড় ব্যথায় ভুগছেন তারা ভ্রমণের সময় সারভ্যাইক্যাল কলার ব্যাবহার করবেন যাতে ঝাঁকুনিতে ব্যথা বেড়ে না যায়।
সবাইকে অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা। সবার এবারের ঈদ হোক ব্যথামুক্ত।
লেখক: বাত, ব্যথা, পারালাইসিস ও ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ
চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।