প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রস্তুত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ। প্রায় তিনশ’ বছর ধরে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি ও ১ মিনিট আগে ১টি শর্টগানের গুলি ফুটিয়ে জামাত আরম্ভের ঘোষণা দেয়া হয়। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই।
সকাল ১০টায় শোলাকিয়ায় ১৮৮তম ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসউদ। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সদস্য সচিব সদরের ইউএনও মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ মাঠ পরিদর্শন শেষে জানান, ঈদ বর্ষাকালে হওয়ায় পানি নির্গমনের দিকে গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে। মাঠের আশপাশে কোথাও যেন পানি না জমে সে দিকটি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
১৮২৮ সালে শোলাকিয়ায় ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এর যাত্রা শুরু হয় ১৭৫০ সালে। মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হযরত খানের উত্তরসূরী দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করে দেন। বর্তমানে এ জায়গার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ একর। যা আগত মুসল্লিদের মাত্র অর্ধেকের বেশি ধারণ করতে পারে।
এ এলাকার পূর্বনাম ছিল রাজাবাড়িয়া। জনশ্রুতি আছে, ঈদগাহ মাঠে ১ম বড় জামাতে সোয়ালাখ লোক অংশ নিয়েছিলেন। যে কারণে এর নামকরণ করা হয় সোয়ালাকিয়া।
মাঠের ভেতরে ২৬৫টি কাতারের ঈদগাহে জায়গা সংকুলানের অভাবে মাঠের চারপাশের খালি জায়গা-জমি, ক্ষেত, বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এবং রাস্তা-ঘাটে অগণিত মুসল্লিকে নামাজ আদায় করতে হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন খান জানান, শোলাকিয়ার ঈদ জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। প্রবেশদ্বারে বসানো হবে ওয়াচ টাওয়ার।
এছাড়া জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের ক্যাম্প বসানো হবে এবং সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা দল মোতায়েন থাকবে ঈদগাহ এলাকায়। ঈদের দিন পুলিশের পাশাপাশি র্যাব নিরাপত্তার কাজে মোতায়েন থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শোলাকিয়া ঈদের মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফর উল্লাহ জানান, ঈদগাহ মাঠের সার্বিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেশ-বিদেশের মুসল্লিদেরকে গ্রহণ করতে শোলাকিয়া মাঠ পরিচালনা কমিটি ও কিশোরগঞ্জবাসী পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।