করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশে তৃতীয়বারের মতো ঈদ উদযাপন হয়েছে। তবে গতবারের চেয়ে এবারের প্রেক্ষাপট ছিল আরও ভয়াবহ। এমন অবস্থার মধ্যে এবার ঈদ এসেছে যখন আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষে অবস্থান করছে। সেই শঙ্কা থেকে এবার ঈদযাত্রায় বিধিনিষেধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা মানতে দেখা যায়নি জনসাধারণকে। এরমধ্যেই আবার ফিরতি যাত্রা নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন: ‘করোনা সংক্রমণ সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টায় কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলে ফিরতে মানুষের বাঁধভাঙা জনস্রোত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেের বাইরে চলে যেতে পারে।’ তার এ আশঙ্কা অমূলক নয়। কারণ, ভারতে এমনই জনসমাগমের পর সংক্রমণের উচ্চমাত্রা আমরা দেখেছি।
একই আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কথায়ও। তিনি বলেছেন: ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদ উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষ যেভাবে ভিড় জমিয়ে বাড়ি গিয়েছেন, তাদের ফিরতি যাত্রা বিলম্বিত করতে সুপারিশ করা হয়েছে। পরে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে যেন তাদের ফেরানো হয়।’ ঈদ পরবর্তী সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা থেকেই হয়তো চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
তবে আমরা এও জানি যে, চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ বাড়ায় ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের কর্মস্থলে আসার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হবে। জনজীবনে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কিন্তু সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা যে রয়েছে, তাও ঠিক। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের আরও কৌশলী ভূমিকা রাখতে হবে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে না পারার কারণে চাকরিজীবীদের কর্ম হারানোর শঙ্কাও আছে। মহামারিকালে এমনটা যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এরমধ্যে ঈদের দিন আরও একটি দুঃসংবাদ আমরা পেয়েছি। চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে দুই রোগীর শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত হয়েছে।’ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এজন্য সবাইকে করোনা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমরা এখনও সচেতন না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এমনটা অবশ্য কখনোই আমাদের কাম্য নয়।