আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন- ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। বিষয়টি স্পষ্ট করেই আজ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তবে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ইভিএমের মতো এতটা স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি। বলেছেন, সেনা মোতায়েন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভোটগ্রহণে এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও বাংলাদেশে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। যদিও স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকটি নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করেছে ইসি। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তা নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের তীব্র অাপত্তি রয়েছে। এমনকি সর্বশেষ জনসমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন ইভিএম ব্যবহারে সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। বিএনপি মনে করে, ইভিএম ব্যবহারের চেষ্টার মধ্যে সরকারের দুরভিসন্ধি আছে। অবশ্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলপে দলটির অন্যতম প্রস্তাব ছিল এটি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুক্তি; ইভিএম আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা। অনেক উন্নত-গণতান্ত্রিক দেশ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে। আর পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে স্বচ্ছতা এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত থাকে। এই দুই দলের বিতর্কের বাইরে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ভিন্নভাবে বিষয়টি দেখতে চাচ্ছে; ইসি মনে করছে– বছরখানেক সময়ের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণ ইভিএম তৈরি করা যেমন কঠিন; তেমনি এসব মেশিন পরিচালনা বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও কষ্টসাধ্য। তাছাড়া সাধারণ ভোটারদেরকে ইভিএম ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা অসম্ভব কাজ। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই তারা মূলত ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে এসেছে। নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে অনেক রাজনৈতিক দলই সাধুবাদ জানিয়েছে। আমরাও মনে করি, পুরোপুরি প্রস্ততি না নিয়ে ইভিএম ব্যবহার করা উচিৎ নয়। পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়েও এমন সিদ্ধান্তে আসা জরুরি। কেননা বিতর্কমুক্ত এবং সর্বজনের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচন করতে হলে জনমতকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে। তা না হলে সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হবে।