আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তারাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তার হত্যার বিচার যাতে না হয়, সে ব্যবস্থাও করেছিল। তারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ রাখতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। এটা শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করার জন্য করা হয়নি, এটা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করার পরিকল্পনার অংশ ছিল।
শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) এর অডিটোরিয়ামে সিনিয়র কৃষিবিদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ঢাকা মেট্রোপলিটন শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আনিসুল হক বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে, জাতির পিতাকে হত্যা করে বিচার বন্ধ করে দিয়েছি, তোমাদেরকে হত্যা করলে তার বিচার হবে না। এসব ধাপ্পাবাজি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাহস বন্ধ করা যাবে না। সেটা ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের জনগণ প্রমাণ করেছে, যদিও অনেক সময় লেগেছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে আইনসম্মতভাবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করেন। এই অধ্যাদেশের মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে কোন মামলা করা যাবে না। শুধু তাই নয় আদালতও কোনদিন, কোন সময়, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তার মানে হচ্ছে জনগণের ক্ষমতা হরণ করা, জনগণ বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে যেতে পারবে না, তাদের বিচার পাওয়ার শেষ আশ্রয়স্থলে যেতে পারবে না। আর আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়েও এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের একটি অনুচ্ছেদে বলা ছিল, যারা এই আইনের দ্বারা ‘প্রটেকটেড’ হবেন তাদের একটি সার্টিফিকেট লাগবে যা রাষ্ট্রপতি দেবেন। তার অর্থ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর একটি জিডিও করা হয়নি, বিচার তো দূরের কথা। আমরা তখন অনেক হত্যাকাণ্ড দেখেছি, তার বিচার হয়নি। অনেক মানুষকে মরে যেতে দেখেছি, তার বিচার হয়নি। জেল হত্যাকাণ্ডের একটি এফআইআর হয়েছিল, তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
আনিসুল হক বলেন, ১৯৯৬ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেল হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারসহ অনেক বড়বড় হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলী জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া, কেআইবি’র মহাসচিব মো. খায়রুল আলম (প্রিন্স), আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. তাসদিকুর রহমান সনেট বক্তৃতা করেন।