চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না: প্রধানমন্ত্রী

ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: যুদ্ধাপরাধী এবং খুনিরা যেন কোনদিন ক্ষমতায় আসতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন: আপনারাই বিবেচনা করেন কাকে ভোট দেবেন। যারা এতিমের টাকা চুরি করে, আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, দেশের টকা পাচার করে, যারা স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করে তাদের ভোট দেবেন নাকি যারা উন্নয়ন করে তাদের।

বিএনপি-জামায়াতের আমলে দেশ নরকে পরিণত হয়েছিল অভিযোগ করে করে শেখ হাসিনা বলেন: ওই সময় আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকেই শুধু হত্যা করেনি, গর্ভবতী নারী এমনকি সন্তান প্রসবের দু’দিন পরেও নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে, তাদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি জামায়াত জনগনের উন্নয়ন না করে কেবল নিজেদের আখের গুছিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন: ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য তারা ৩ হাজার ৩৫ জনকে মানুষকে পুড়িয়ে দিয়েছে। ৫০০ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাড়ে তিন হাজার যানবাহন পুড়িয়ে দেশব্যাপী এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে।

এর বিপরীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমরা ক্ষমতায় এসেই জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করি। কারণ আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্রই হচ্ছে জনগনের কল্যাণ।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন: ৪ কোটি ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীদের ৩৫ কোটিরও বেশি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে, বিভিন্ন স্তরে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ৩০ লাখ স্কুল শিক্ষার্থীর নামে তার মায়ের মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানো হচ্ছে। প্রায় ৩০ লাখ মায়ের মোবাইল ছিল না। আমরা তাদের মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছি। প্রায় প্রতিটি জেলায়ই সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে।

তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উন্নতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন: ইন্টারনেট গ্রাহক এখন ৮ কোটি, ১৩ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, ৪জি চালু হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং কম্পিউটার ল্যাব সমৃদ্ধ আধুনিক ক্লাসরুম করে দেওয়া হচ্ছে। ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে আউটসোর্সিংয়ে। শিক্ষাগ্রহণ করো, উপার্জন করো এই নীতিতে যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সাড়ে ৫ হাজার পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল করা হচ্ছে। তথ্য বাতায়ন করে দিয়েছি। এছাড়া আগামী মাসেই বঙ্গবন্ধু স্যালেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সাফল্যে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন: মাছ উৎপাদনে আমরা বিশ্বে ৪র্থ, সবজিতে ৩য়, চাল উৎপাদনে ৪র্থ। এভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা আরও উন্নয়নের চেষ্টা করছি যাতে বাংলাদেশ কারও কাছে ভিক্ষা করে না চলে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২৬ হাজার কিমি রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। ৪৯ টি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার ব্যাপারটিকে অর্থনৈতিক সক্ষমতার পরিচায়ক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন: প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা বিশ্বের সেরা পাঁচ দেশের একটি যা অব্যশই আমাদের জন্য গর্বের।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন: আপনারা গ্রামে গ্রামে সরকারের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরুন। যাতে জনগণ বুঝতে পারে।

বুধবার সকাল থেকেই সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে হেঁটে, বাসে, ট্রাকে, খণ্ড খণ্ড মিছিল করে আসতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। দিনটি ঘিরে সকাল থেকেই ছিল আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচি। যার স্রোত গিয়ে মেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

এসব মিছিলে ছিল সভা উপলক্ষে তৈরি নানা প্রতিকৃতি ও পোস্টার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিবাহী পোস্টার ও প্রতিকৃতি ছিল অনেকের হাতে।