রাজধানীর মূল সড়কগুলো ছাড়া সারাদেশের বিভাগীয় শহর, জেলা-উপজেলা সদরসহ প্রায় প্রতিটি রাস্তায় দেখা যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ও রিকশা। বিদ্যুতের অপচয় রোধে এসব যানবাহন চলাচলে ব্যবস্থা নিলেও আমদানি বা বিক্রির ব্যাপারে জানে না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ)।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) জনাব মোঃ রিয়াজুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: বাংলাদেশের সড়কগুলোতে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই আমরা এসবের রেজিস্ট্রেশনও দেইনা। এসব সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা থেকে নিবন্ধন নেয়। আর কীভাবে আমদানি হচ্ছে বা দেশের বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে সে ব্যাপারেও আমরা বলতে পারবো না।
তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক আমদানির ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। আমরা এসব চলাচল বন্ধে জেলা প্রশাসনকে বলেছি। তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তবে এ ব্যাপারে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতর আমদানী ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগে যোগাযোগ করা হলে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) প্রাণেশ রঞ্জন সূত্রধরকে চ্যানেল আই অনলাইনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সর্বশেষ গত বুধবার বগুড়া শহরের সাতমাথায় অভিযান চালিয়ে অসংখ্য রিকশা, ভ্যান, অটো রিকশা বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।
জেলা আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির (আরটিসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার শহরের সাতমাথায় ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ১৭টি অটোরিকশা আটকের পর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। পৌর মেয়র মাহবুবর রহমানের উপস্থিতিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা হাকিম (এডিএম) মোহাম্মদ হালিমুন রাজীব।
এ অভিযানের সময় ক্ষতিগ্রস্ত চালকেরা প্রশ্ন তোলেন, শহরের বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রিকশা কেনাবেচা হলেও সেখানে অভিযান না দিয়ে শুধু চালকদের কাছ থেকে রিকশা জব্দ করে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদ অধিবেশনের এক প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদ্যুৎ, জালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন, বিদ্যুতের অপচয় রোধে সারা দেশে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা স্থানীয়ভাবে সংযোজন নিষিদ্ধ।
কিন্তু তারপরেও সারাদেশের সড়কগুলোতে প্রতিদিনই দেখা মিলছে নতুন নতুন ইজিবাইক, অটোরিক্সা এবং রিক্সা। এসব আমদানি ও বাজারজাতের ব্যাপারে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নিয়ে কর্তৃপক্ষ কেবল খেটে খাওয়া মানুষদের ওপর জুলুম করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।