নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অনুমতি না দেয়ায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা চলছে। ড.ইউনূসের পক্ষ থেকে ‘সম্মেলনে সরকার অনুমোদন দেয়নি’ বলে যে অভিযোগ, তা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
দেরিতে অনুমতি চাওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে এ সম্মেলনের অনুমোদন দেয়া যায়নি বলে জানান তিনি। বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের এসব কথা বলেন আইজিপি।
সাংবাদিকদের আইজিপি বলেন, ‘স্বল্প সময়ে এতো বড় সম্মেলনের নিরাপত্তার প্রস্তুতি না থাকায় ড. ইউনূসকে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক সম্মেলন সরকার বন্ধ করেনি।’
শহীদুল হক বলেন, ‘ঢাকাতে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে এবং সরকার এসব সম্মেলনকে স্বাগত জানায়। এসব সম্মেলনের নিরাপত্তা দেওয়ার সক্ষমতাও আমাদের রয়েছে। কিন্তু সকলকে অন্ধকারে রেখে মাত্র তিনদিন আগে বলবেন নিরাপত্তা দিতে সেটা হয় না। এজন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময় দরকার। বিদেশি এতো মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার।’
‘পরবর্তীতে পর্যাপ্ত সময় আগে অনুমতি চাওয়া হলে অনুমতি দেয়া হবে কিনা’- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি বর্তমানে সরকার সম্মেলন বন্ধ করে দিয়েছে বলে যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন সেটা ঠিক নয়।’
আইজিপি জানান, ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক ব্যবসা দিবস-২০১৭’ শিরোনামে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার অনুমতি চেয়ে ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে গত ২৩ জুলাই একটি আবেদন করা হয় ঢাকার পুলিশ সুপারের কাছে। পরদিন এ কথা জানতে পারে পুলিশ সদরপ্তর।
আইজিপি বলেন, ‘হঠাৎ করে এমন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে তার মাত্র তিনদিন আগে ঢাকা জেলার এসপিকে জানানো হল। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদরদপ্তর কেউ জানে না। এতোগুলো বিদেশি প্রতিনিধি আসবেন অথচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে না।’
ইউনূস সেন্টার থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ইউনূস সেন্টারের আয়োজনে সাভারের জিরাবোতে অবস্থিত সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে ২৮-৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় এ বছরের সামাজিক ব্যবসা দিবসের মূল আলোচ্য হচ্ছে -‘সম্পদ কেন্দ্রীকরণ বন্ধ করা কি সম্ভব?’।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছিল, নবনির্মিত এই কনভেনশন সেন্টারটি একটি সামাজিক ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হবে। এ বছরের সামাজিক ব্যবসা দিবস উদ্বোধন করবেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ৩৬টিরও বেশি দেশের পাঁচ শতাধিক নাগরিকসহ অন্তত দুই হাজার অতিথি ও অংশগ্রহণকারী দিবসের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) সমন্বয়ক টমাস গাস অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য রাখবেন। অন্য বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে থাকবেন বিশ্ব অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জোয়েল বোজো। সম্মেলনের দু’দিনে ১৫টি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। থাকছে ৯টি দেশীয় ফোরাম। যেসব দেশ নিজ নিজ ‘কান্ট্রি ফোরাম’ অনুষ্ঠান করবে সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, চীন, মালয়েশিয়া, জাপান, ভারত, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও প্যাসিফিক, থাইল্যান্ড, ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকা।