রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের একজন সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য ন্যাটোকে দায়ী করেছেন।
রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যম আরটি জানায়, মস্কোর দোরগোড়ায় ন্যাটো বাহিনীর সম্প্রসারণের কারণে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে জানান রামাফোসা।
রামাফোসা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার আইন প্রণেতাদের বলেন, যদি ন্যাটো বছরের পর বছর ধরে তার নিজের নেতা এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে তাদের মস্কোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ যে বৃহত্তর অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে পারে সে বিষয়ে মনোযোগ দেয়া উচিত ছিলো।
১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর একটি প্রত্যাশিত শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থাকার পরিবর্তে ন্যাটো তাদের সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখে। ১৯৯৯ সালে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং চেক প্রজাতন্ত্র থেকে শুরু করে ওয়ারশ চুক্তির প্রাক্তন দেশগুলি এবং প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলিকে এর সাথে যুক্ত করেছিল৷ ২০০৪ সালে আরেকটি ধাপে বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া এবং স্লোভেনিয়াসহ, ২০০৯ সালে আলবেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়াকেও এর অন্তর্ভূক্ত করে। তারপর ২০১৭ সালে মন্টিনিগ্রো এবং ২০২০ সালে উত্তর মেসিডোনিয়া আসে ন্যাটো এবং ইউক্রেন ও জর্জিয়াকে এই ব্লকে যোগ দিতে আহ্বান জানায়।
মস্কো শুরু থেকেই তার সীমানার কাছাকাছি ন্যাটোর উপস্থিতির তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য একটি মিশন শুরু করেছে যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক ব্লকের সম্প্রসারণকে থামিয়ে দেবে এবং কিয়েভকে ন্যাটোর ব্লকে যোগ দিতে বাধা দেবে। কিন্তু বরাবরের মতো পশ্চিমারা রাশিয়ার এই উদ্বেগ উপেক্ষা করে।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভের সরকারকে ‘অসামরিকীকরণ এবং নিরস্ত্রীকরণ’ করার লক্ষ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি “বিশেষ সামরিক অভিযান” ঘোষণা করেন। তিনি এটি নিশ্চিত করতে চান যে কিয়েভ রাশিয়া কিংবা নতুন স্বীকৃত দনবাস প্রজাতন্ত্রের জন্য আর হুমকি সৃষ্টি করবে না।
যার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ন্যাটো মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে গ্রাস করার জন্য একটি ‘বিনা প্ররোচনায়’ যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগ করেছে।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের নিন্দা প্রস্তাবকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, এই আগ্রাসনে সংকটের কারণগুলো বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে রাশিয়ার আগ্রাসনের সাথে একমত হওয়া।
রামাফোসা বলেন, ‘আমরা বলপ্রয়োগ বা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিতে পারি না’।