দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হত্যা চেষ্টার ঘটনা এখন অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। হামলার ঘটনাটি চুরির বলে দাবি করা হলেও পুলিশের ধারণা এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম আবু জাফর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম আবু জাফর বলেছেন, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের রিমান্ডে আসামীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরই মধ্যে ইউএনও’র গাড়ি চালক হাফিজ ও ইয়াসিন নামের দুইজনকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার পর আটক করেছে পুলিশ। বর্তমানে থানা হেফাজতে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা কিছু রাজনৈতিক নেতার সংশ্লিষ্টতা বিষয়েও তদন্ত করছে তারা।
এর আগে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রোববার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার দুই গৃহপরিচারিকাকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন জবেদা খাতুন (২৮) ও আরসোলা (৩২)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ইমাম আবু জাফরের নেতৃত্বে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রধান আসামি যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আসাদুল হক (৩৮) রংমিস্ত্রী নবীরুল ইসলাম (৩৩) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৯)কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনজনের কাছে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে ঘটনার নেপথ্যসহ সব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ চিত্র বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
গাড়ি চালক এবং গৃহপরিচারিকা ছাড়াও প্রধান আসামি আসাদুলের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম শাওন, বাগানের মালি সুলতান কবির এবং শ্যামল কুমারকে শনিবার থেকে থানা হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার অথবা আটক দেখাননি তারা। তথ্য জানতে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাচেষ্টা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও যাদের আটক করা হয়েছে তারা হলেন,উপজেলার বানিয়াল পালশা গ্রামের খোকা শেখের ছেলে মো. শাহজাহান শেখ (৩৫) চক বাসুনিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সোহেল রানা(২৯) মামলার প্রধান আসামি আসাদুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম (৪০), একই গ্রামের সইমুদ্দিনের ছেলে সুলতান (৩২) ও ধীরেন্দ্র নাথের ছেলে শ্যামল চন্দ্র (৩০)।
গত বুধবার রাত ৩টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। হত্যার উদ্দেশে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে হাতুড়ি দিয়ে হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন তারা। ঘটনার পরে ইউএনওর বড় ভাই শেখ আরিফ হোসেন মামলা দায়ের করেন। আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতির দিকে।